০৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত সংলাপে সম্পর্ক বাড়বে

তিন দিনের ইউরোপ সফরের শেষ পর্বে বুধবার ফ্রান্সে পৌঁছান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্যারিসে পৌঁছে নিজের ‘বন্ধু’ তথা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে আলিঙ্গন করেন তিনি। সেখানে মহাকাশ, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও বহুপাক্ষিক ফোরামে অবস্থান সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। আলোচনায় উঠে আসে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রসঙ্গও।

এদিকে, দ্বিতীয়বারের মতো ফরাসী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কোনও বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধান ফ্রান্স সফর করলেন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নেমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছেন, ফ্রান্স ভারতের অন্যতম প্রধান শক্তিশালী বন্ধু। দুটি দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে।

পাশাপাশি, ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত বলেও জানান ভারত সরকারের সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “আমার বন্ধু ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে প্রতিবারের মতো আনন্দবোধ করছি। বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। উন্নতির রাস্তায় গর্বের সঙ্গে একে অপরের পাশে আছে ভারত এবং ফ্রান্স। আমাদের সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত আছে।”

ফ্রান্সে সংক্ষিপ্ত সফর নিয়ে মোদি বলেন, “ফ্রান্সের সফর ঝটিকা হলেও অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ পেয়েছি আমি এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য তাঁকে এবং ফ্রান্সের সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং নৈশভোজের পর যৌথ বিবৃতিতে মোদি ও ম্যাক্রোঁ বলেন, “ইউক্রেনে মানবিকতার সংকট এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত এবং ফ্রান্স।”

যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, “ইউক্রেনে যে সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যু হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করছে দুই দেশই। আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমে অবিলম্বে যুদ্ধবিবরতির পক্ষে সওয়াল করা হচ্ছে।”

তবে, ‘বন্ধুর’ দেশে গিয়েও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পক্ষে সওয়াল করলেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পথে হেঁটে রাশিয়ার উপর এককভাবে দায় চাপাননি তিনি।

এর আগে, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফ্রান্সে পৌঁছেছেন। গত সপ্তাহেই ম্যাক্রোঁ দ্বিতীয়বারের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। দুই নেতা একটি কৌশলগত বৈঠক করবেন, যেখানে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ়় করার বিষয় নিয়ে কথা হবে। চলতি বছর ভারত ও ফ্রান্সের কূটনৈতিক সম্পর্ক ৭৫তম বর্ষে পড়েছে। দুটি দফায় প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এটি নরেন্দ্র মোদীর পঞ্চম ফ্রান্স সফর। ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এর আগে ২০১৮ সালে ভারতে এসেছিলেন।

এর আগে জার্মানী ও ডেনমার্কে সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করেন মোদী। জার্মানীর বার্লিনে ৬ষ্ঠ ভারত-জার্মানি আন্তঃসরকারি পরামর্শ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মোদী। পরবর্তীতে ডেনমার্কে ২য় ইন্দো-নর্ডিক সম্মেলনে অংশ নেন তিনি। এরপরই ভারতে ফেরার পথে ফ্রান্সে যাত্রাবিরতি করেন বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত সংলাপে সম্পর্ক বাড়বে

প্রকাশ: ০৩:০৭:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মে ২০২২

তিন দিনের ইউরোপ সফরের শেষ পর্বে বুধবার ফ্রান্সে পৌঁছান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্যারিসে পৌঁছে নিজের ‘বন্ধু’ তথা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে আলিঙ্গন করেন তিনি। সেখানে মহাকাশ, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও বহুপাক্ষিক ফোরামে অবস্থান সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। আলোচনায় উঠে আসে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রসঙ্গও।

এদিকে, দ্বিতীয়বারের মতো ফরাসী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কোনও বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধান ফ্রান্স সফর করলেন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নেমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছেন, ফ্রান্স ভারতের অন্যতম প্রধান শক্তিশালী বন্ধু। দুটি দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে।

পাশাপাশি, ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত বলেও জানান ভারত সরকারের সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “আমার বন্ধু ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে প্রতিবারের মতো আনন্দবোধ করছি। বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। উন্নতির রাস্তায় গর্বের সঙ্গে একে অপরের পাশে আছে ভারত এবং ফ্রান্স। আমাদের সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত আছে।”

ফ্রান্সে সংক্ষিপ্ত সফর নিয়ে মোদি বলেন, “ফ্রান্সের সফর ঝটিকা হলেও অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ পেয়েছি আমি এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য তাঁকে এবং ফ্রান্সের সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং নৈশভোজের পর যৌথ বিবৃতিতে মোদি ও ম্যাক্রোঁ বলেন, “ইউক্রেনে মানবিকতার সংকট এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত এবং ফ্রান্স।”

যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, “ইউক্রেনে যে সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যু হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করছে দুই দেশই। আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমে অবিলম্বে যুদ্ধবিবরতির পক্ষে সওয়াল করা হচ্ছে।”

তবে, ‘বন্ধুর’ দেশে গিয়েও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পক্ষে সওয়াল করলেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পথে হেঁটে রাশিয়ার উপর এককভাবে দায় চাপাননি তিনি।

এর আগে, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফ্রান্সে পৌঁছেছেন। গত সপ্তাহেই ম্যাক্রোঁ দ্বিতীয়বারের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। দুই নেতা একটি কৌশলগত বৈঠক করবেন, যেখানে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ়় করার বিষয় নিয়ে কথা হবে। চলতি বছর ভারত ও ফ্রান্সের কূটনৈতিক সম্পর্ক ৭৫তম বর্ষে পড়েছে। দুটি দফায় প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এটি নরেন্দ্র মোদীর পঞ্চম ফ্রান্স সফর। ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এর আগে ২০১৮ সালে ভারতে এসেছিলেন।

এর আগে জার্মানী ও ডেনমার্কে সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করেন মোদী। জার্মানীর বার্লিনে ৬ষ্ঠ ভারত-জার্মানি আন্তঃসরকারি পরামর্শ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মোদী। পরবর্তীতে ডেনমার্কে ২য় ইন্দো-নর্ডিক সম্মেলনে অংশ নেন তিনি। এরপরই ভারতে ফেরার পথে ফ্রান্সে যাত্রাবিরতি করেন বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক