০৮:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেন নিয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া মোদী-ম্যাক্রোঁ বৈঠকে

ইউক্রেন ইস্যুতে ভারত ও ফ্রান্সের মাঝে পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরী হয়েছে মোদী-ম্যাক্রোঁ বৈঠকে। তিন দিনের ইউরোপ সফরের শেষ পর্বে বুধবার ফ্রান্সে পৌঁছান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্যারিসে পৌঁছে নিজের ‘বন্ধু’ তথা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে আলিঙ্গন করেন তিনি। সেখানে মহাকাশ, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও বহুপাক্ষিক ফোরামে অবস্থান সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। আলোচনায় উঠে আসে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রসঙ্গও।

পাশাপাশি, ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত বলেও জানান ভারত সরকারের সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “আমার বন্ধু ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে প্রতিবারের মতো আনন্দবোধ করছি। বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। উন্নতির রাস্তায় গর্বের সঙ্গে একে অপরের পাশে আছে ভারত এবং ফ্রান্স। আমাদের সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত আছে।”

এদিকে, দ্বিতীয়বারের মতো ফরাসী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কোনও বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধান ফ্রান্স সফর করলেন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নেমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছেন, ফ্রান্স ভারতের অন্যতম প্রধান শক্তিশালী বন্ধু। দুটি দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে।

ফ্রান্সে সংক্ষিপ্ত সফর নিয়ে মোদি বলেন, “ফ্রান্সের সফর ঝঁটিকা হলেও অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ পেয়েছি আমি এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য তাঁকে এবং ফ্রান্সের সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং নৈশভোজের পর যৌথ বিবৃতিতে মোদি ও ম্যাক্রোঁ বলেন, “ইউক্রেনে মানবিকতার সংকট এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত এবং ফ্রান্স।”

যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, “ইউক্রেনে যে সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যু হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করছে দুই দেশই। আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমে অবিলম্বে যুদ্ধবিবরতির পক্ষে সওয়াল করা হচ্ছে।”

তবে, ‘বন্ধুর’ দেশে গিয়েও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পক্ষে সওয়াল করলেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পথে হেঁটে রাশিয়ার উপর এককভাবে দায় চাপাননি তিনি।

এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা বলেন, “ইউক্রেনের বিষয়ে একে অপরের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তৃত বোঝাপড়া ছিল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ফরাসী রাষ্ট্রপতির বৈঠকে। দুই নেতা একমত হয়েছেন, ভারত ও ফ্রান্সের মাঝে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় এবং সম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ। যাতে উভয় রাষ্ট্রই ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতিতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে।”

কোয়াত্রা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী ফরাসী রাষ্ট্রপতিকে সেই স্থানের একটি বিস্তৃত বোঝাপড়া দিয়েছেন, যেখান থেকে ভারতীয় অবস্থানের উৎপত্তি হয়েছে, যা অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করার এবং কূটনীতি ও সংলাপের মাধ্যমে চলমান পরিস্থিতির সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “দুই নেতা খুব বিস্তৃতভাবে কথা বলেছেন। ইউক্রেনের পরিস্থিতির ক্যাসকেডিং প্রভাব, বৈশ্বিক খাদ্য ঘাটতি, সারের মতো পণ্যের ঘাটতি এবং কীভাবে দুই দেশ একসাথে অংশীদার হতে পারে সে বিষয়ে খুব বিস্তৃতভাবে মতবিনিময় করেছেন।” খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

ইউক্রেন নিয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া মোদী-ম্যাক্রোঁ বৈঠকে

প্রকাশ: ০৩:১৯:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মে ২০২২

ইউক্রেন ইস্যুতে ভারত ও ফ্রান্সের মাঝে পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরী হয়েছে মোদী-ম্যাক্রোঁ বৈঠকে। তিন দিনের ইউরোপ সফরের শেষ পর্বে বুধবার ফ্রান্সে পৌঁছান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্যারিসে পৌঁছে নিজের ‘বন্ধু’ তথা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে আলিঙ্গন করেন তিনি। সেখানে মহাকাশ, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও বহুপাক্ষিক ফোরামে অবস্থান সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। আলোচনায় উঠে আসে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রসঙ্গও।

পাশাপাশি, ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত বলেও জানান ভারত সরকারের সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “আমার বন্ধু ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে প্রতিবারের মতো আনন্দবোধ করছি। বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। উন্নতির রাস্তায় গর্বের সঙ্গে একে অপরের পাশে আছে ভারত এবং ফ্রান্স। আমাদের সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত আছে।”

এদিকে, দ্বিতীয়বারের মতো ফরাসী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কোনও বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধান ফ্রান্স সফর করলেন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নেমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছেন, ফ্রান্স ভারতের অন্যতম প্রধান শক্তিশালী বন্ধু। দুটি দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে।

ফ্রান্সে সংক্ষিপ্ত সফর নিয়ে মোদি বলেন, “ফ্রান্সের সফর ঝঁটিকা হলেও অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ পেয়েছি আমি এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য তাঁকে এবং ফ্রান্সের সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং নৈশভোজের পর যৌথ বিবৃতিতে মোদি ও ম্যাক্রোঁ বলেন, “ইউক্রেনে মানবিকতার সংকট এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত এবং ফ্রান্স।”

যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, “ইউক্রেনে যে সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যু হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করছে দুই দেশই। আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমে অবিলম্বে যুদ্ধবিবরতির পক্ষে সওয়াল করা হচ্ছে।”

তবে, ‘বন্ধুর’ দেশে গিয়েও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পক্ষে সওয়াল করলেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পথে হেঁটে রাশিয়ার উপর এককভাবে দায় চাপাননি তিনি।

এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা বলেন, “ইউক্রেনের বিষয়ে একে অপরের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তৃত বোঝাপড়া ছিল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ফরাসী রাষ্ট্রপতির বৈঠকে। দুই নেতা একমত হয়েছেন, ভারত ও ফ্রান্সের মাঝে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় এবং সম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ। যাতে উভয় রাষ্ট্রই ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতিতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে।”

কোয়াত্রা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী ফরাসী রাষ্ট্রপতিকে সেই স্থানের একটি বিস্তৃত বোঝাপড়া দিয়েছেন, যেখান থেকে ভারতীয় অবস্থানের উৎপত্তি হয়েছে, যা অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করার এবং কূটনীতি ও সংলাপের মাধ্যমে চলমান পরিস্থিতির সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “দুই নেতা খুব বিস্তৃতভাবে কথা বলেছেন। ইউক্রেনের পরিস্থিতির ক্যাসকেডিং প্রভাব, বৈশ্বিক খাদ্য ঘাটতি, সারের মতো পণ্যের ঘাটতি এবং কীভাবে দুই দেশ একসাথে অংশীদার হতে পারে সে বিষয়ে খুব বিস্তৃতভাবে মতবিনিময় করেছেন।” খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক