টোকিওতে চলছে বিশ্বের বহুল আলোচিত জোট কোয়াড এর শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক। এরই এক ফাঁকে, মঙ্গলবার, বৈঠকে বসেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উভয়ের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্বকে ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্কে পরিণত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এসময়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর নিজের পক্ষ থেকে ইন্দো-মার্কিন সম্পর্ককে ‘বিশ্বাসের অংশীদারিত্ব’ বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়া, উভয় দেশের রাষ্ট্রনেতাই ভারতে মার্কিন বিনিয়োগ উদ্যোগ চুক্তির প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরও বলেন, “এমন অনেক কিছু আছে, যা আমাদের দেশগুলো একসঙ্গে করতে পারে এবং করবেও। আমি পৃথিবীতে সবচেয়ে কাছের মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্ব তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
তিনি বলেন, “আমি সন্তুষ্ট যে আমরা ভারতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন ভ্যাকসিন উৎপাদনে সহায়তা, ক্লিন এনার্জি উদ্যোগের জন্য ইউএস ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। আমি আনন্দিত যে আমরা ইন্দো-ইউএস ভ্যাকসিন অ্যাকশন প্রোগ্রাম পুনর্নবীকরণ করছি।”
বাইডেনের কথায়, বিশ্বের উপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাবসমূহ কীভাব প্রশমিত করা যায়, সে বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা চালাচ্ছে।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে ‘প্রকৃত অর্থে’ একটি ‘বিশ্বাস’ হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “সাধারণ স্বার্থ এবং মূল্যবোধ আমাদের দুই দেশের মধ্যে এই বিশ্বাসের বন্ধনকে শক্তিশালী করেছে।”
মোদীর কথায়, “আমাদের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক এবং শক্তিশালী অর্থনৈতিক সহযোগিতা ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বকে অনন্য করে তোলে।” মার্কিন বিনিয়োগ প্রণোদনা চুক্তি দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করবে বলে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কও ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তবে সেগুলো এখনও আমাদের সম্ভাবনার চেয়ে কম। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে ভারত-মার্কিন মতামত একই। একই সাথে, অভিন্ন উদ্বেগের হাত থেকে রক্ষা পেতে সমমনা দেশগুলোকেও সঙ্গে নেওয়ার পক্ষে দিল্লি।”
এর আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি মঙ্গলবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে কোয়াড বৈঠকে যোগ দেন। সোমবার, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ১২টি দেশ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক চালু করেছে। যার লক্ষ্য ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিস্থাপকতা, স্থায়িত্ব, অন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, ন্যায্যতা এবং প্রতিযোগিতা বাড়াতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব জোরদার করা। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক