০৯:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘে পাক জঙ্গির পাশে চীন; ভারতের প্রতিবাদ

রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফের পাক জঙ্গির পাশে দাঁড়ালো চীন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকা ও ভারত পাক জঙ্গি আবদুল রহমান মাক্কিকে গ্লোবাল টেরোরিস্ট হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব চীন আটকে দেয়। আবদুল রহমান মাক্কি লস্কর-ই-তইবার প্রধান ও ২৬/১১ -এর মাস্টার মাইন্ড হাফিজ সাইদের শ্যালক।

চীন আবদুল রহমান মাক্কিকে কালো তালিকাভুক্ত করার আবেদনকে ‘টেকনিক্যাল হোল্ড’ করে রেখেছে। চীন যতক্ষণ না এই ‘টেকনিক্যাল হোল্ড’ প্রত্যাহার করছে, মাক্কির বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব আর গ্রহণ করা যাবে না। এটি ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছে। চীনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে ভারত। আন্তর্জাতিক মহলের দাবি, ক্রমাগত চীনের এই ধরনের সিদ্ধান্ত আদতে পাক ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলোকে মদদ দিচ্ছে। সন্ত্রাস দমনের যে বার্তা চীন দেয়, তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল থাকছে না।

লস্কর-ই-তইবার সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করত আবদুল রহমান মাক্কি। লস্কর-ই-তইবার সেকেন্ড ইন কমান্ড তাঁকে বলা যেতে পারে। বিভিন্ন দেশ থেকে জঙ্গি গোষ্ঠীটির জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ করত। মূলত লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে বিদেশি সংযোগ স্থাপন করাই তার কাজ ছিল।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে আমেরিকায় মাক্কির সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে মাক্কির লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এমনকী মার্কিন প্রশাসন মাক্কির খবর দিতে পারলে ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। আন্তর্জাতিক চাপে পড়েই ২০১৯ সালে পাক প্রশাসন মাক্কিকে গৃহবন্দি করে রাখে। ২০২০ সালে পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন আদালত তাকে জঙ্গিদের আর্থিক মদদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। তখন থেকে মাক্কি জেল বন্দি রয়েছে।

চীন আগেও পাক জঙ্গির পাশে দাঁড়িয়েছে। ২০০৯ সালে পাক জঙ্গি জইশ ই মুহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে কালো তালিকায় তোলার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। সেই সময়ও রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সেই প্রস্তাবে ভেটো প্রয়োগ করেছিল চীন।

এরপর একাধিকবার ভারত নিরাপত্তা পরিষদে মাসুদ আজহারকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রতি ক্ষেত্রে এই পাক জঙ্গির পাশে দাঁড়িয়েছিল চীন। ২০১৬ সালে পাঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গিরা হামলা চালায়। এই হামলার মাস্টারমাইন্ড মাসুদ আজহার বলে নয়াদিল্লি অভিযোগ করে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মাসুদ আজহারের নাম রাষ্ট্রসংঘের কালো তালিকাভুক্ত জন্য ভারত আবেদন করে। ভারত সেই সময় নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সকে পাশে পেয়েছিলো। কিন্তু ভেটো প্রয়োগ করে চীন। পরের বছরও এক ঘটনা ঘটে।

২০১৯ সালে মাসুদ আজহার রাষ্ট্রসংঘের কালো তালিকাভুক্ত হয়। সেবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ১৫টি দেশ ভোট দিয়েছিল। একমাত্র চীন মাসুদ আজহারের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। বাকি দেশগুলো মাসুদ আজহারকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল। সেই সময় যদিও বাধা দিতে দিয়েছিল চীন। টেকনিক্যাল সমস্যার অজুহাত দিতে চেয়েছিলো। তবে সেই অজুহাত ধোপে টেকেনি। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

জাতিসংঘে পাক জঙ্গির পাশে চীন; ভারতের প্রতিবাদ

প্রকাশ: ০৬:৪৭:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২

রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফের পাক জঙ্গির পাশে দাঁড়ালো চীন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকা ও ভারত পাক জঙ্গি আবদুল রহমান মাক্কিকে গ্লোবাল টেরোরিস্ট হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব চীন আটকে দেয়। আবদুল রহমান মাক্কি লস্কর-ই-তইবার প্রধান ও ২৬/১১ -এর মাস্টার মাইন্ড হাফিজ সাইদের শ্যালক।

চীন আবদুল রহমান মাক্কিকে কালো তালিকাভুক্ত করার আবেদনকে ‘টেকনিক্যাল হোল্ড’ করে রেখেছে। চীন যতক্ষণ না এই ‘টেকনিক্যাল হোল্ড’ প্রত্যাহার করছে, মাক্কির বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব আর গ্রহণ করা যাবে না। এটি ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছে। চীনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে ভারত। আন্তর্জাতিক মহলের দাবি, ক্রমাগত চীনের এই ধরনের সিদ্ধান্ত আদতে পাক ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলোকে মদদ দিচ্ছে। সন্ত্রাস দমনের যে বার্তা চীন দেয়, তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল থাকছে না।

লস্কর-ই-তইবার সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করত আবদুল রহমান মাক্কি। লস্কর-ই-তইবার সেকেন্ড ইন কমান্ড তাঁকে বলা যেতে পারে। বিভিন্ন দেশ থেকে জঙ্গি গোষ্ঠীটির জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ করত। মূলত লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে বিদেশি সংযোগ স্থাপন করাই তার কাজ ছিল।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে আমেরিকায় মাক্কির সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে মাক্কির লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এমনকী মার্কিন প্রশাসন মাক্কির খবর দিতে পারলে ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। আন্তর্জাতিক চাপে পড়েই ২০১৯ সালে পাক প্রশাসন মাক্কিকে গৃহবন্দি করে রাখে। ২০২০ সালে পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন আদালত তাকে জঙ্গিদের আর্থিক মদদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। তখন থেকে মাক্কি জেল বন্দি রয়েছে।

চীন আগেও পাক জঙ্গির পাশে দাঁড়িয়েছে। ২০০৯ সালে পাক জঙ্গি জইশ ই মুহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে কালো তালিকায় তোলার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। সেই সময়ও রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সেই প্রস্তাবে ভেটো প্রয়োগ করেছিল চীন।

এরপর একাধিকবার ভারত নিরাপত্তা পরিষদে মাসুদ আজহারকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রতি ক্ষেত্রে এই পাক জঙ্গির পাশে দাঁড়িয়েছিল চীন। ২০১৬ সালে পাঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গিরা হামলা চালায়। এই হামলার মাস্টারমাইন্ড মাসুদ আজহার বলে নয়াদিল্লি অভিযোগ করে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মাসুদ আজহারের নাম রাষ্ট্রসংঘের কালো তালিকাভুক্ত জন্য ভারত আবেদন করে। ভারত সেই সময় নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সকে পাশে পেয়েছিলো। কিন্তু ভেটো প্রয়োগ করে চীন। পরের বছরও এক ঘটনা ঘটে।

২০১৯ সালে মাসুদ আজহার রাষ্ট্রসংঘের কালো তালিকাভুক্ত হয়। সেবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ১৫টি দেশ ভোট দিয়েছিল। একমাত্র চীন মাসুদ আজহারের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। বাকি দেশগুলো মাসুদ আজহারকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল। সেই সময় যদিও বাধা দিতে দিয়েছিল চীন। টেকনিক্যাল সমস্যার অজুহাত দিতে চেয়েছিলো। তবে সেই অজুহাত ধোপে টেকেনি। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক