ইউক্রেনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান একেবারে সঠিক বলেই মনে করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, “এই আবহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শত্রুতা আরও বেড়ে যাওয়া হতে রোধ করা।”
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর নাম না করে সাসপেন্ডেড বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার নবী সম্পর্কে করা মন্তব্য টেনে আনেন। এ ব্যাপারে উপসাগরীয় দেশগুলির প্রতিক্রিয়ারও উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তিই পরিস্থিতি শান্ত করতে সাহায্য করেছে।”
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক শিক্ষক ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জয়শঙ্কর বলেন, “এটি খুবই জটিল বিষয়। শত্রুতা এমন স্তরে বাড়তে দেওয়া উচিত নয়, যেটা শুধুমাত্র ক্ষতিই করে। এটাই হল সবচেয়ে জরুরি বিষয়।”
তিনি বলেন, “ইউক্রেন নিয়ে ভারতের অবস্থান মহাভারতে কৃষ্ণের কীর্তির মতোই। যে কীর্তি যুদ্ধ এড়িয়ে আলোচনা ও কূটনৈতিক কথাবার্তার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক, কৌশলগত এবং বর্তমান স্বার্থ জড়িত রয়েছে। সেই স্বার্থ পরিচালনা করা প্রয়োজন।”
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ”ইউক্রেন সংঘাত বেড়েই চলেছে। এর জেরে নানাবিধ সমস্যাও বাড়ছে। জ্বালানির ঘাটতির সমস্যা ছাড়াও খাদ্য ঘাটতি, সারের ঘাটতির মতো সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আগামী বছরগুলোতে খাদ্য ঘাটতিও প্রবল আকার নেবে। যখন কোনও পরিস্থিতির জন্য বিশ্বব্যাপী দ্বন্দ্ব ও সমস্যা তৈরি হয়, সেই সময়ে শান্ত ও বিচক্ষণ আচরণ দরকার। এছাড়াও আমাদের নিজেদের জনগণের কল্যাণের জন্য এবং তাঁদের সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করতে হবে। আমি মনে করি যে এক অর্থে আমরা এটাই করছি।”
এরই পাশাপাশি সাসপেন্ডেড বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার বক্তব্য প্রসঙ্গেও এদিন ঘুরিয়ে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও একবারের জন্যও নূপুরের নাম মুখে আনেননি তিনি। পয়গম্বর সম্পর্কে নূপুরের মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে একাধিক দেশ। উপসাগরীয় এলাকার বিভিন্ন দেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অন্য দেশগুলির সঙ্গে রাখা বন্ধুত্বের সম্পর্ক সেই ক্ষোভ অনেকটা সামাল দিতে পেরেছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক