উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতি শাভকাত মির্জিওয়েভের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার, সমরখন্দে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি সহ বিদ্যমান নানা ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করেন দুই নেতা। পরবর্তীতে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।
উল্লেখ্য, উজবেকিস্তানে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংগঠন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) ২২তম সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন দুই নেতা। বৈঠক শেষে এক টুইটে মোদী বলেন, “প্রেসিডেন্ট শভকাত মির্জিওয়েভের সাথে একটি দুর্দান্ত বৈঠক হয়েছে। এসসিও শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করার জন্য তাকে ধন্যবাদ। ভারত ও উজবেকিস্তানের মধ্যে সংযোগ, বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
এদিকে, এসসিও বৈঠকের ফাঁকেই মোদী সাক্ষাৎ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে। শুক্রবারের এই মোদী-পুতিন বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়, বিশ্বের সবার নজর ছিল সেদিকে।
বৈঠকের শুরুতেই রাশিয়াকে যুদ্ধ থামানোর আর্জি জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর জবাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, তারাও “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব” যুদ্ধ শেষ করতে চান।
বৃহস্পতিবার রাতেই এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে উজবেকিস্তানের সমরখন্দে যান মোদী। সম্মেলনে যোগ দিতে সেখানে যান পুতিনও। তাদের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বিবরণ প্রকাশ করেছে ক্রেমলিন।
বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বিশেষ পরামর্শ দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “আমি জানি, আজকের যুগ যুদ্ধের যুগ নয়। আমি ফোনে এ নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। শান্তির পথে হাঁটতে আপনাকে অনুরোধও জানিয়েছি। গণতন্ত্র, কুটনীতি এবং আলোচনাই বিশ্বকে একাট্টা করে রাখতে পারে।”
তবে পুতিন বলেন, ইউক্রেইন আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং রণক্ষেত্রে তাদের নিজেদের উদ্দেশ্য পূরণের পথে হেঁটেছে।
এরপরই তিনি মোদীকে বলেন, “আমি আপনার অবস্থান জানি। রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে আপনার উদ্বেগ সম্পর্কেও আমি ওয়াকিবহাল। আমরাও চাই এ যুদ্ধ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ হোক। এর জন্য আমরা সবকিছু করব।”
“কেবল দুঃখজনক ব্যাপার হল এই যে, অপরপক্ষ, অর্থাৎ ইউক্রেইনের নেতৃবৃন্দ, আলোচনা প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে এবং সামরিক পন্থাতেই তারা লক্ষ্য অর্জন করতে চায় বলে জানিয়েছে।”
রাশিয়া গত ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত ইউক্রেইনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ রাশিয়ার দখলে রয়েছে।
রাশিয়া ইউক্রেইনে এ যুদ্ধকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, পশ্চিমা দেশগুলোর আগ্রাসনের প্লাটফর্ম হিসাবে ব্যবহার হওয়া থেকে ইউক্রেইনকে রুখতে এই অভিযানের প্রয়োজন ছিল।
তাছাড়া, পশ্চিমারা রাশিয়াকে ভেঙে ফেলতে চায়, সেটি ঠেকানোর জন্য রাশিয়া ইউক্রেইনে সেনা পাঠিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন পুতিন।
শুক্রবার সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেতে গিয়ে পুতিন ওই মন্তব্য করেন। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক