সন্ত্রাসবাদ নিয়ে রাষ্ট্রসংঘ থেকে পাকিস্তান ও চীনকে কড়া বার্তা দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। দুই দেশের নাম না নিলেও একেবারে কড়া ভাষায় জয়শংকর জানিয়ে দিলেন, জঙ্গিদের বাঁচাতে যারা রাজনীতি করে, তারা নিজেদেরই বিপদ ডেকে আনছে।
শনিবার (স্থানীয় সময়) রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কোনও দেশের নাম না করে জয়শংকর বলেন, “জঙ্গিদের নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে রাষ্ট্রসংঘ। যারা নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ১২৬৭-তে রাজনীতির রং চড়িয়ে থাকে এবং কখনও কখনও ঘোষিত জঙ্গিদের হয়ে সওয়াল করার মতো স্তরেও পৌঁছে যায়, তারা যে বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে আছে, সেটা খুব ভালোভাবে জানে। বিশ্বাস করুন, তাতে নিজেদের স্বার্থ তো পূরণ হয় না, ভাবমূর্তিও ভালো হয় না।”
নিজের ভাষণে একবারও চীনের নাম উল্লেখ না করলেও জয়শংকরের ইঙ্গিতটা যে বেইজিংয়ের দিকে ছিল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই কূটনৈতিক মহলের। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ১২৬৭-র আওতায় ইসলামিক স্টেট, আল-কায়দা এবং সহযোগী জঙ্গি সংগঠন, প্রতিষ্ঠানগুলিকে যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সহযোগিতা করে বা অর্থ প্রদান করে, তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেই প্রস্তাব ১২৬৭-র আওতায় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের ‘বিশ্বব্যাপী জঙ্গি’ হিসেবে ঘোষণা করার যে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে, তাতে একাধিকবার বাধা দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি সাজিদ মিরকে ‘বিশ্বব্যাপী জঙ্গি’ হিসেবে ঘোষণা করার যে প্রস্তাব পেশ করেছিল ভারত এবং আমেরিকা, তাতেও বাধা দিয়েছিল বেইজিং। ভারতের অন্যতম ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিকে প্রস্তাব ১২৬৭-র আওতায় ‘বিশ্বব্যাপী জঙ্গি’ হিসেবে ঘোষণা করতে উদ্যোগী হয়েছিল নয়াদিল্লি। লস্কর জঙ্গি আবদুল রহমান মাক্কি এবং জামাত-উদ-দাওয়ার জঙ্গি আবদুল রউফ আজহারের ক্ষেত্রে একই কাজ করেছিল পাকিস্তানের ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র চীন।
চীনের পাশাপাশি পাকিস্তানকেও কড়া বার্তা দেন জয়শংকর। তিনি বলেন, “কয়েক দশক ধরে ভারতকে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে। ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির পক্ষে সওয়াল করে আসছে। আমাদের মতটা একেবারে স্পষ্ট, সন্ত্রাসবাদের কোনও কার্যকলাপের কোনও ব্যাখ্যা হয় না। কোনও দাবি বা সওয়াল যতই জোরদার হোক না, তা রক্তের দাগ ঢাকতে পারে না।” খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক