ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে চলতি বছর ১ কোটি ৬২ লাখ পর্যটক ভ্রমণে গিয়েছে, যা দেশটির স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এটি অস্থিরতা কবলিত অঞ্চলটিতে অর্থনৈতিক উন্নতির একটি নজির বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কেন্দ্রশাসিত এ অঞ্চলটি হিমালয় পবর্তমালার তুষার আচ্ছাদিত চূড়া, দ্রুত বয়ে চলা স্বচ্ছ পানির ধারা, মুঘল আমলের বিভিন্ন বাগান, আলপাইন তৃণভূমি ও নয়নাভিরাম ডাল হ্রদের হাউসবোটের জন্য পরিচিত। চলতি বছর কোভিড-১৯ মহামারীর বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর থেকেই অঞ্চলটিতে স্বদেশী পর্যটকদের ভীড় নামে বলে জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রণালয়।
মোদী সরকার ২০১৯ সালে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার তুলে নিয়ে এর রাজ্য মর্যাদা বিলুপ্ত করে একে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে। এসব পদক্ষেপ এ অংশকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে একীভূত করতে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের। এবারের রেকর্ড পর্যটক আগমন মোদী সরকারের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত কয়েক দশক ধরে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে লড়াই করছে। প্রতিবেশী পাকিস্তানও ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের মালিকানা দাবি করে আসছে। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এক টুইটে লিখেছেন, “কাশ্মীর জেগে উঠেছে!”
তিনি জানান, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ৬২ লাখ পর্যটক জম্মু ও কাশ্মীর ভ্রমণ করেছে, এ সংখ্যা ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তিনি বলেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নতির জন্য সরকারের রূপান্তরমূলক ও সংস্কারগুলো পর্যটনে বড় ধরনের গতি সঞ্চার করেছে।”
তবে পূর্ববর্তী বার্ষিক পর্যটকের সর্বোচ্চ সংখ্যা কতো ছিল, তা জানাননি তিনি। গোয়েল নির্দিষ্ট করে না জানালেও কাশ্মীরের ভ্রমণে যাওয়া অধিকাংশই অভ্যন্তরীণ পর্যটক। জম্মু ও কাশ্মীরের অধিকাংশ এলাকা ভ্রমণের জন্য বিদেশি পর্যটকদের একটি বিশেষ পাস লাগে।
উদ্যান ও কৃষির পাশাপাশি পর্যটন কাশ্মীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাত। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মোট অর্থনীতির ৭ শতাংশ আয় এ খাত থেকে আসে। গত মাসে একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা কাশ্মীরের সবচেয়ে বড় শহর শ্রীনগরে একটি মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলের উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে দুই দশকেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর সেখানে সিনেমা হল চালু হয়।
তবুও এখনও মাঝে মাঝেই সহিংসতা দেখে কাশ্মীর। চলতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অঞ্চলটিতে সফর শুরু করার দিনটিতেই কাশ্মীরের কারা বিভাগের প্রধান খুন হন। একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এ খুনের দায় স্বীকার করেছে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক