০১:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-জার্মানী ‘গতিশীল অংশীদারিত্ব’ চুক্তি

বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর দিল্লিতে জার্মান বিদেশমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের সঙ্গে অভিবাসন এবং গতিশীলতা অংশীদারিত্বের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই স্বাক্ষরের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর বলেছেন, “জার্মানি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে আমাদের সবচেয়ে বড় অংশীদার। আমরা আজ বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং ভৌগলিক সূচকগুলোতে ভারত-ইইউ আলোচনাকে সমর্থন করছি। আমরা আশা করছি সে সব ভালোভাবে এগিয়ে যাবে। এফডিএ-তে আলোচনার তৃতীয় রাউন্ড সবেমাত্র শেষ হয়েছে।”

বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর আরও বলেছেন, “আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব, যা দুই দশকেরও বেশি পুরনো, বৃহত্তর রাজনৈতিক বিনিময়, ক্রমাগত সম্প্রসারিত বাণিজ্য, আরও বিনিয়োগ এবং জনগণের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক দ্বারা সত্যিই শক্তিশালী হয়েছে।”

জয়শঙ্কর আরও বলেছেন, “আমরা বহুপাক্ষিক বিষয়েও আলোচনা করেছি। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের ক্ষেত্রে ভারত ও জার্মানি জি-৪-এর কাঠামোর মধ্যে যোগাযোগ করে। আমরা ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সি নিয়ে আলোচনা করেছি।”

এছাড়া, ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক শিশুকন্যার নিগ্রহের বিষয়েও আলোচনা করেন উভয় নেতা। ভুলবশত নাতনিকে আঘাত করে ফেলেছিলেন ঠাকুমা। এর পরই যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলে শিশুকন্যাকেই পরিবারের থেকে আলাদা করে দিয়েছিল জার্মান সরকার। এক বছর আগের সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।

সোমবার ওই শিশুকন্যার নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই ধরনের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। ওই শিশুর ভারতীয় ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক পরিবেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকার প্রয়োজন রয়েছে।”

প্রসঙ্গত, জার্মান মুলুকে বিপাকে পড়া ওই শিশুটির নাম আরিহা শাহ। গত বছর থেকেই মা-বাবার কাছে আসতে পারছে না সে। এদিন তার নাম উল্লেখ করে জয়শংকর বলেন, “এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই জার্মান সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে ভারতীয় দূতাবাস। এই নিয়ে জার্মান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন জয়শংকর।

অন্যদিকে এদিনই জার্মান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ‘গতিশীল অংশীদারিত্ব’ নামে একটি চুক্তিতে সই করেন জয়শংকর। এই চুক্তির ফলে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে দুই দেশের পড়ুয়াদের সুবিধা হবে বলে জানা গিয়েছে।

এর পাশাপাশি ফের একবার রাশিয়ার থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল কেনা নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন জয়শংকর। “ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলি ভারতের থেকে অনেক বেশি খনিজ তেল রাশিয়ার থেকে আমদানি করেছে।” সোমবার আবারও এসব বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, এর আগেও এই নিয়ে বিদেশে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সেসময়, তিনি বলেছিলেন, “ভারত মাসে যে পরিমাণ তেল রাশিয়ার থেকে কেনে, ইউরোপ এক বেলার মধ্যে তা কিনে নেয়।”

এছাড়াও, এদিন সীমান্ত পার সন্ত্রাস নিয়ে এদিন মন্তব্য করেছেন বিদেশমন্ত্রী। আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি ও সীমান্ত পার সন্ত্রাসে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা নিয়েও জার্মান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাকিস্তান সীমান্ত পার সন্ত্রাস বন্ধ না করলে আলোচনা শুরু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন জয়শংকর।

তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে জার্মানি নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়াতে চায়। ভারত বিশ্বের অনেক দেশের কাছে এখন রোল মডেল।” ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ভারতের অবস্থান এদিন স্পষ্ট করে দেন জয়শংকর। আলোচনার মাধ্যমেই যুদ্ধ ও সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে দাবি করেছেন তিনি। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

 

ট্যাগ:

ভারত-জার্মানী ‘গতিশীল অংশীদারিত্ব’ চুক্তি

প্রকাশ: ১২:৪৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর দিল্লিতে জার্মান বিদেশমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের সঙ্গে অভিবাসন এবং গতিশীলতা অংশীদারিত্বের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই স্বাক্ষরের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর বলেছেন, “জার্মানি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে আমাদের সবচেয়ে বড় অংশীদার। আমরা আজ বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং ভৌগলিক সূচকগুলোতে ভারত-ইইউ আলোচনাকে সমর্থন করছি। আমরা আশা করছি সে সব ভালোভাবে এগিয়ে যাবে। এফডিএ-তে আলোচনার তৃতীয় রাউন্ড সবেমাত্র শেষ হয়েছে।”

বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর আরও বলেছেন, “আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব, যা দুই দশকেরও বেশি পুরনো, বৃহত্তর রাজনৈতিক বিনিময়, ক্রমাগত সম্প্রসারিত বাণিজ্য, আরও বিনিয়োগ এবং জনগণের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক দ্বারা সত্যিই শক্তিশালী হয়েছে।”

জয়শঙ্কর আরও বলেছেন, “আমরা বহুপাক্ষিক বিষয়েও আলোচনা করেছি। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের ক্ষেত্রে ভারত ও জার্মানি জি-৪-এর কাঠামোর মধ্যে যোগাযোগ করে। আমরা ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সি নিয়ে আলোচনা করেছি।”

এছাড়া, ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক শিশুকন্যার নিগ্রহের বিষয়েও আলোচনা করেন উভয় নেতা। ভুলবশত নাতনিকে আঘাত করে ফেলেছিলেন ঠাকুমা। এর পরই যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলে শিশুকন্যাকেই পরিবারের থেকে আলাদা করে দিয়েছিল জার্মান সরকার। এক বছর আগের সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।

সোমবার ওই শিশুকন্যার নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই ধরনের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। ওই শিশুর ভারতীয় ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক পরিবেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকার প্রয়োজন রয়েছে।”

প্রসঙ্গত, জার্মান মুলুকে বিপাকে পড়া ওই শিশুটির নাম আরিহা শাহ। গত বছর থেকেই মা-বাবার কাছে আসতে পারছে না সে। এদিন তার নাম উল্লেখ করে জয়শংকর বলেন, “এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই জার্মান সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে ভারতীয় দূতাবাস। এই নিয়ে জার্মান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন জয়শংকর।

অন্যদিকে এদিনই জার্মান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ‘গতিশীল অংশীদারিত্ব’ নামে একটি চুক্তিতে সই করেন জয়শংকর। এই চুক্তির ফলে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে দুই দেশের পড়ুয়াদের সুবিধা হবে বলে জানা গিয়েছে।

এর পাশাপাশি ফের একবার রাশিয়ার থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল কেনা নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন জয়শংকর। “ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলি ভারতের থেকে অনেক বেশি খনিজ তেল রাশিয়ার থেকে আমদানি করেছে।” সোমবার আবারও এসব বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, এর আগেও এই নিয়ে বিদেশে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সেসময়, তিনি বলেছিলেন, “ভারত মাসে যে পরিমাণ তেল রাশিয়ার থেকে কেনে, ইউরোপ এক বেলার মধ্যে তা কিনে নেয়।”

এছাড়াও, এদিন সীমান্ত পার সন্ত্রাস নিয়ে এদিন মন্তব্য করেছেন বিদেশমন্ত্রী। আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি ও সীমান্ত পার সন্ত্রাসে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা নিয়েও জার্মান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাকিস্তান সীমান্ত পার সন্ত্রাস বন্ধ না করলে আলোচনা শুরু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন জয়শংকর।

তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে জার্মানি নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়াতে চায়। ভারত বিশ্বের অনেক দেশের কাছে এখন রোল মডেল।” ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ভারতের অবস্থান এদিন স্পষ্ট করে দেন জয়শংকর। আলোচনার মাধ্যমেই যুদ্ধ ও সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে দাবি করেছেন তিনি। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক