সোমবার ● ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

ঘোষণা
প্রিয় পাঠকমন্ডলী, নতুন রূপে, নব উদ্যমে- দেশ ও দশের তথ্যতৃষ্ণা মেটাতে জাগ্রত, নির্ভীক ও সচেতন দৈনিক ইত্তেহাদ-এর নির্মাণপর্ব চলছে, পাশেই থাকুন...
অরুণাচলে জমি দখলে ব্যর্থ চীন: রাজনাথ

অরুণাচলে জমি দখলে ব্যর্থ চীন: রাজনাথ

রাজনাথ

অরুণাচল প্রদেশে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীনা সৈন্যদের সঙ্গে ভারতীয় জওয়ানদের সংঘর্ষের ঘটনার কথা স্বীকার করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, চীনা বাহিনী স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিল। সে অনুপ্রবেশ প্রচেষ্টা সাহসের সঙ্গে ভারতীয় জওয়ানেরা রুখে দিয়েছেন। ওই ঘটনায় কোনো ভারতীয় সেনা নিহত বা গুরুতর আহতও হননি।

আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংসদের উভয় কক্ষে এক বিবৃতিতে ওই সংঘর্ষের বিষয়ে উল্লেখ করে রাজনাথ সিং বলেন, এটুকু সমস্যা সামলে নেওয়ার ক্ষমতা ভারতীয় বাহিনীর আছে। ওই ঘটনার পর চীনের সঙ্গে ভারত কূটনৈতিক পর্যায়ে কথা বলেছে। ভারতীয় বাহিনী সীমান্তে যেকোনো চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় প্রস্তুত।

চীন অবশ্য সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে মন্তব্য না করে বলেছে, পরিস্থিতি ‘স্থিতিশীল’। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েংবিন বলেছেন, “আমাদের জ্ঞানমতো চীন-ভারত সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি ভালোই। দুই দেশই সেনা ও কূটনৈতিক পর্যায়ে সীমান্ত আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।”

প্রতিরক্ষামন্ত্রী যে সময় বিবৃতি দেন, সে সময়েই সরকারি সূত্রে জানা যায়, অরুণাচল প্রদেশের আকাশসীমায় চীনা তৎপরতার খবর পেয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী টহলদারি শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ কারণে বেশ কয়েকবার ফাইটার জেটকে কাজে লাগানো হয়েছে।

৯ ডিসেম্বর অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সীমান্তে ইয়াংসি এলাকায় চীনা বাহিনী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢুকতে যায়। তৎপর ভারতীয় জওয়ানেরা তাদের বাধা দিলে দুই পক্ষে হাতাহাতি বেধে যায়। দুই পক্ষেই বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন জানিয়ে রাজনাথ সিং বলেন, ভারতীয় জওয়ানদের প্রতিরোধের ফলে চীনা ফৌজ তাদের অবস্থানে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। দুই দিন পর ১১ ডিসেম্বর দুই দেশের বাহিনীর ‘পতাকা বৈঠক’ হয়। সেই বৈঠকে চীনকে ভারত কড়াভাবে তার মনোভাব জানিয়ে বলেছে, এমন আগ্রাসী পদক্ষেপ যেন আর না হয়। বলা হয়েছে, শান্তি রক্ষায় ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বার্থে এমন আচরণ ঠিক নয়।

গতকাল সোমবার রাতে সরকারি সূত্রের বরাতে বলা হয়, ৩০০ চীনা সেনা জড়ো হয়েছিল। তার মধ্যে ২০০ জন ভারতীয় ছাউনি সরাতে সক্রিয় হয়। কিন্তু বীর ভারতীয় জওয়ানেরা তাদের প্রতিহত করেন। ৯ ডিসেম্বরের সংঘর্ষে গুরুতর আহত কয়েকজন ভারতীয় জওয়ানকে আসাম রাজ্যের গুয়াহাটির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও সংবাদমাধ্যম জানায়।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী যদিও তাঁর বিবৃতিতে এ বিষয়ের উল্লেখ করেননি। আজ মঙ্গলবার সকালে সংসদ ভবনে যাওয়ার আগে তিনি বৈঠক করেন তিনি বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও তিনি বৈঠক করেন।

আজ সকাল থেকেই এই সংঘর্ষ নিয়ে সংসদ উত্তাল হয়ে ওঠে। লোকসভা ও রাজ্যসভার শুরু হতেই বিরোধীরা প্রশ্নোত্তর পর্ব মুলতবি রেখে এই বিষয় নিয়ে আলোচনার দাবি জানাতে থাকেন। দুই কক্ষেই বিরোধীরা সে জন্য নোটিশ দেন। সরকার মুলতবি প্রস্তাব না মানায় রাজ্যসভা দুপুর ১২টা পর্যন্ত মুলতবি করে দেওয়া হয়। লোকসভায় দুপুর ১২টায় বিবৃতি দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

কিন্তু বিবৃতি শেষে আলোচনার অনুমতি না মেলায় বিরোধীরা সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। সংসদ ভবন চত্বরে কংগ্রেস নেতা শক্তিসিন গোহিল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকার বারবার সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে আলোচনার দাবি নাকচ করে আসছে। সংসদকেও অন্ধকারে রেখেছে।

তিনি বলেন, “লাদাখের বিজেপি সাংসদ পর্যন্ত বলেছেন, চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতীয় জমি দখল করেছে। সরকার প্রকৃত সত্য গোপন করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই ভারতীয় বাহিনীর পক্ষে। বাহিনীর বীরত্বে গর্বিত। কিন্তু সরকার সত্য গোপনে আগ্রহী।”

দুই বছর আগে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান অঞ্চলে ভারত-চীন সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেঁধেছিল। তাতে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন শতাধিক। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেটাই ছিল প্রথম সংঘর্ষ। অরুণাচল প্রদেশে এতকাল কোনো উত্তেজনা দেখা যায়নি। সরকারি বয়ানে ‘ছোটখাটো’ হলেও এটাই প্রথম সংঘর্ষ। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

শেয়ার করুন




©সর্বস্বত্ব স্বত্ত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২১-২০২২
Designed and developed by Smk Ishtiak