পঞ্চম স্করপিন সাবমেরিন পেল ভারতীয় নৌসেনা। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের মাঝগাঁও ডক থেকে আইএনএস বাগীর নামে ভারতে তৈরি এই ‘উন্নততর স্টেলথ্ ডুবোজাহাজটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আরব সাগরে নামানো হয়।
নৌবাহিনীর এই অনুষ্ঠানে বোতাম টিপে বাগীরের যাত্রার সূচনা করেন প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েকের স্ত্রী বিজয়া। শ্রীপদ গোয়া থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সামুদ্রিক শিকারী মাছের নামধারী এই ডুবোজাহাজ বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনা নৌবাহিনীর মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনুমান। প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে আইএনএস বাগীর নামে একটি রুশ ডুবোজাহাজ ভারতীয় নৌসেনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
ফরাসি সংস্থা ডিসিএনএস-এর সঙ্গে নকশা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা চুক্তির ভিত্তিতে মোট ৬টি কলভরী গোত্রের স্করপেন ডুবোজাহাজ বানাচ্ছে ভারত। এই প্রকল্পের নাম ‘প্রজেক্ট ৭৫’। প্রথম ভারতীয় স্করপেন আইএনএস কলভরীকে ২০১৫ সালের অক্টোবরে নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কলভরীর পাশাপাশি আইএনএস খাণ্ডেরী স্করপেন ইতিমধ্যেই ভারতীয় নৌবাহিনীর কাজে যোগ দিয়েছে। মাঝগাঁও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আইএনএস করঞ্জ এবং আইএনএস ভেলা এখন সমুদ্রের গভীরে চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষায়। ষষ্ঠ তথা শেষ স্করপেন আইএনএস বাগশিরের নির্মাণের চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে।
প্রায় ৬৭ মিটার লম্বা স্করপেন ডুবোজাহাজের ওজন দেড় হাজার টনেরও বেশি। চওড়া প্রায় সাড়ে ৬ মিটার। এই গোত্রের ডুবোজাহাজ চালানো যায় ডিজেল ও বিদ্যুতে। দীর্ঘক্ষণ জলের তলায় ডুবে থাকা এবং শত্রু নৌবাহিনী ‘সোনার’-এর নজরদারি এড়িয়ে হামলা চালানোর ক্ষমতা রয়েছে স্করপেনের। একই সঙ্গে জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এবং টর্পেডো ছুড়তে পারে এই ডুবোজাহাজ।
তবে নরেন্দ্র মোদীর জমানায় রাফাল যুদ্ধবিমানের মতোই বিতর্কের কেন্দ্র হয়েছে স্করপেন। ২০১৬ সালে প্রকাশিত খবরের অভিযোগ, এই সাবমেরিনগুলো সম্পর্কে বিভিন্ন গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। সেই সব তথ্য অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছিল। ভারতীয় নৌসেনার দাবি, কিছু গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গেলেও, তাতে এই সাবমেরিনের সক্ষমতা কোনও ভাবেই কমে যায় না।
যদিও অভিযোগ, অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া ‘রেস্ট্রিকটেড স্করপেন ইন্ডিয়া’ নামে ২২,৪৩৯ পৃষ্ঠার ‘গোপন নথি’তে এই গোত্রের ডুবোজাহাজের যুদ্ধ করার পদ্ধতি, তথ্য আদানপ্রদানের কৌশল এবং জলের তলায় আত্মগোপনের প্রযুক্তি-সহ নানা তথ্য রয়েছে। বিশেষত, জলের তলায় কোন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে তথ্য আদানপ্রদান হয়, তা জানা হয়ে গেলে ডুবোজাহাজকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করা শত্রুর পক্ষে সহজ হয়ে যায়। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক