ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ত্রাণ সামগ্রীর প্রথম দফা পাঠিয়েছে ভারত। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিমানের মাধ্যমে ভূমিকম্প ত্রাণ সামগ্রীর প্রথম চালান তুরস্কে পাঠিয়েছে। সিরিয়াতেও প্রায় ৬ টন মেডিকেল সরঞ্জাম পাঠিয়েছে দেশটি। প্রকৃতপক্ষে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আগের দিন তুরস্কে ৭.৮, ৭.৬ এবং ৬.০ মাত্রার পরপর তিনটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এ তথ্য জানিয়েছেন, ভারতের পাঠানো ত্রাণ চালানের মধ্যে রয়েছে একটি বিশেষজ্ঞ জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল। এতে পুরুষ ও মহিলা উভয় কর্মী, অত্যন্ত দক্ষ কুকুর দল, চিকিৎসা সরবরাহ, উন্নত ড্রিলিং সরঞ্জাম এবং ত্রাণ প্রচেষ্টার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত৷
সোমবার ভারত সরকার অবিলম্বে জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ) অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল, চিকিৎসা দল এবং ত্রাণ সামগ্রী ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্কে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষতিগ্রস্ত দেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়ার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
তথ্য অনুসারে, ১০০ সদস্যের দুটি এনডিআরএফ দলকে প্রশিক্ষিত কুকুর এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সহ ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের জন্য পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধসহ প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও প্যারামেডিকদের একটি দলও পাঠানো হয়েছে।
সোমবারের ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়াসহ চারটি দেশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়। গত দিনে তিনবার এখানে ভূমিকম্পের শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের কারণে অনেক ভবন ধ্বসে পড়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা মাপা হয়েছে ৭.৮। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও শত শত মানুষ আটকা পড়েছে এবং অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তুরস্কে সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, তুরস্ক ও সিরিয়ায় অন্তত ৮ হাজার মানুষ নিহত এবং ১৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফিয়াট ওকতেকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ১০টি শহরে ১৭০০টিরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সময়ে সিরিয়ায় অন্তত দু হাজারের বেশি নিহত ও হাজারো আহত হয়েছে। ইসরায়েল ও লেবাননেও অনেক মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক