০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জি২০ সভাপতিত্ব ভারতের অনন্য সুযোগ: জয়শঙ্কর

ভারতের সভাপতিত্বে প্রথমবারের মতো বেঙ্গালুরুর নন্দী হিলসে গ্রীষ্মকালীন রিট্রিটে আগামী ২২-২৫ ফেব্রুয়ারি জি-২০ গ্রুপের দেশগুলো বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। একদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঋণ সমস্যা, ক্রিপ্টোকারেন্সির নিয়ন্ত্রণ এবং বৈশ্বিক মন্দা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রথম বছরের বার্ষিকীতে এ সম্মেলনে ফিনান্স এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রধানরা আগামী সপ্তাহে ভারতে মিলিত হচ্ছেন, অন্যদিকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি নিয়ে কূটনৈতিক লড়াই চলছে মার্কিন শীর্ষ ধনী জর্জ সোরোসের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের।

বিশ্বব্যাপী ঋণ নেওয়ার খরচ বেড়ে যাওয়ায়, ভারতের প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তা চেয়েছে। সম্মেলনটি কোভিড মহামারী এবং ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রস্ত দেশগুলিকে সাহায্য করার জন্য একটি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করবে। চীন সহ বড় ঋণদাতাদের ঋণের জন্য যখন মিলিত সহযোগিতার আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠেছে, তখন খোদ ভারতেই গণতন্ত্র রয়েছে কি না এমন প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন উদ্যোক্তা জর্জ সোরোস।

এধরনের রাজনৈতিক বিতর্ক এমন এক সময় শুরু হল যখন জি-২০ দেশগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া দরিদ্র দেশগুলোকে ঋণ পরিশোধে বিলম্বের সুযোগের পক্ষে ভারত সমর্থন করছে। যদিও চীন এর বিরোধিতা করছে। বিশ্বব্যাংক ডিসেম্বরে বলেছে যে, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলি দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতাদের কাছে বার্ষিক ঋণ পরিষেবার জন্য ৬২ বিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে, যা বছরে ৩৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটি খেলাপির উচ্চ ঝুঁকিকে আরো বৃদ্ধি করছে। বিশ্বের বৃহত্তম সার্বভৌম ঋণদাতা চীনের কাছে এই ঋণ বোঝার দুই-তৃতীয়াংশ পাওনা। এছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণের জন্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন।

এমন এক সময়ে ভারতে আদানি কেলেঙ্কারী নিয়ে জর্জ সোরোসের মন্তব্য ও এ বিরুদ্ধে এস জয়শঙ্করের প্রতিবাদের দিকে সবার নজর পড়েছে। জয়শঙ্কর বলেছেন, সোরোস ‘বুড়ো, ধনী, বিপজ্জনক’! এ ধরনের বিতর্কের দিন কয়েক আগে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার মধ্যে একটি ভিডিও কলের পরে, নয়াদিল্লি বলেছে যে তারা বৈশ্বিক ঋণদাতাকে শক্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নীতি নির্দেশিকা নিয়ে কাজ করতে বলেছে।

সম্প্রতি আদানি বিতর্কে মোদির ভুমিকা নিয়ে মুখে খুলে শিরোনামে আসেন মার্কিন এই ধনকুবের সোরোস। তিনি বলেন, আদানির শিল্প সাম্রাজ্যে জালিয়াতি এবং স্টক ম্যানিপুলেশনের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এবং সংসদে বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

জয়শঙ্কর এরপর বলেন, যখন কোথাও নির্বাচনের ফল তাদের ইচ্ছামতো না হয়, তখনই সোরেসের মতো ব্যক্তিরা সেখানকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি মনে করেন তারা যেভাবে ভাবেন, সেভাবেই চলতে হবে দুনিয়া। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি বসে আছেন নিউইয়র্কে। তিনি এখনো মনে করেন, পুরো বিশ্ব কীভাবে চলবে তা তার দৃষ্টিভঙ্গিই নির্ধারণ করে দেবে। যদি একজন বুড়ো, ধনী এবং একগুঁয়ে ব্যক্তির কাছে থেমে যাই, তাহলে আমাকে এ পথ থেকে সরে যেতে হবে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

জি২০ সভাপতিত্ব ভারতের অনন্য সুযোগ: জয়শঙ্কর

প্রকাশ: ১০:২০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ভারতের সভাপতিত্বে প্রথমবারের মতো বেঙ্গালুরুর নন্দী হিলসে গ্রীষ্মকালীন রিট্রিটে আগামী ২২-২৫ ফেব্রুয়ারি জি-২০ গ্রুপের দেশগুলো বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। একদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঋণ সমস্যা, ক্রিপ্টোকারেন্সির নিয়ন্ত্রণ এবং বৈশ্বিক মন্দা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রথম বছরের বার্ষিকীতে এ সম্মেলনে ফিনান্স এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রধানরা আগামী সপ্তাহে ভারতে মিলিত হচ্ছেন, অন্যদিকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি নিয়ে কূটনৈতিক লড়াই চলছে মার্কিন শীর্ষ ধনী জর্জ সোরোসের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের।

বিশ্বব্যাপী ঋণ নেওয়ার খরচ বেড়ে যাওয়ায়, ভারতের প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তা চেয়েছে। সম্মেলনটি কোভিড মহামারী এবং ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রস্ত দেশগুলিকে সাহায্য করার জন্য একটি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করবে। চীন সহ বড় ঋণদাতাদের ঋণের জন্য যখন মিলিত সহযোগিতার আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠেছে, তখন খোদ ভারতেই গণতন্ত্র রয়েছে কি না এমন প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন উদ্যোক্তা জর্জ সোরোস।

এধরনের রাজনৈতিক বিতর্ক এমন এক সময় শুরু হল যখন জি-২০ দেশগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া দরিদ্র দেশগুলোকে ঋণ পরিশোধে বিলম্বের সুযোগের পক্ষে ভারত সমর্থন করছে। যদিও চীন এর বিরোধিতা করছে। বিশ্বব্যাংক ডিসেম্বরে বলেছে যে, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলি দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতাদের কাছে বার্ষিক ঋণ পরিষেবার জন্য ৬২ বিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে, যা বছরে ৩৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটি খেলাপির উচ্চ ঝুঁকিকে আরো বৃদ্ধি করছে। বিশ্বের বৃহত্তম সার্বভৌম ঋণদাতা চীনের কাছে এই ঋণ বোঝার দুই-তৃতীয়াংশ পাওনা। এছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণের জন্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন।

এমন এক সময়ে ভারতে আদানি কেলেঙ্কারী নিয়ে জর্জ সোরোসের মন্তব্য ও এ বিরুদ্ধে এস জয়শঙ্করের প্রতিবাদের দিকে সবার নজর পড়েছে। জয়শঙ্কর বলেছেন, সোরোস ‘বুড়ো, ধনী, বিপজ্জনক’! এ ধরনের বিতর্কের দিন কয়েক আগে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার মধ্যে একটি ভিডিও কলের পরে, নয়াদিল্লি বলেছে যে তারা বৈশ্বিক ঋণদাতাকে শক্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নীতি নির্দেশিকা নিয়ে কাজ করতে বলেছে।

সম্প্রতি আদানি বিতর্কে মোদির ভুমিকা নিয়ে মুখে খুলে শিরোনামে আসেন মার্কিন এই ধনকুবের সোরোস। তিনি বলেন, আদানির শিল্প সাম্রাজ্যে জালিয়াতি এবং স্টক ম্যানিপুলেশনের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এবং সংসদে বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

জয়শঙ্কর এরপর বলেন, যখন কোথাও নির্বাচনের ফল তাদের ইচ্ছামতো না হয়, তখনই সোরেসের মতো ব্যক্তিরা সেখানকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি মনে করেন তারা যেভাবে ভাবেন, সেভাবেই চলতে হবে দুনিয়া। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি বসে আছেন নিউইয়র্কে। তিনি এখনো মনে করেন, পুরো বিশ্ব কীভাবে চলবে তা তার দৃষ্টিভঙ্গিই নির্ধারণ করে দেবে। যদি একজন বুড়ো, ধনী এবং একগুঁয়ে ব্যক্তির কাছে থেমে যাই, তাহলে আমাকে এ পথ থেকে সরে যেতে হবে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক