ঢাকা ০৭:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রতিবছর নবায়নযোগ্য ৫০ গিগা বিদ্যুৎ চাই ভারতের

  • প্রতিনিধি
  • ইত্তেহাদ ডেস্ক ।। প্রকাশ: ০৯:৪৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩
  • 13

ভারতের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর ক্ষমতার ৪০ শতাংশই এখন অব্যবহৃত থাকছে। মনে করা হচ্ছে, সরকার যে পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্মাণ করেছিল, প্রকৃত চাহিদা তত বেশি না হওয়াই এর কারণ। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের আগ্রহও এর পেছনে কাজ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। এ দেশে এখনো জ্বালানি হিসেবে কয়লার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। দেশটির বিদ্যুৎ চাহিদার ৬১ শতাংশই পূরণ হয় কয়লা পুড়িয়ে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন পূর্বসূরি বারাক ওবামার জলবায়ু নীতি উল্টে দিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করলেন, তখন হয়তো ভারতের কয়লাখনি ব্যবসায়ীদের চেয়ে বেশি খুশি কেউ হয়নি।

তবে ভারতের সাম্প্রতিক জ্বালানি চালচিত্রে ভিন্ন ছবিই দেখা যাচ্ছে। দেশটির সরকার ঘোষণা দিয়েছে, পরবর্তী দশকের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে তাদের আর নতুন করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কোনো প্রয়োজন নেই। সেই সঙ্গে সৌর ও বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ চাহিদার বড় অংশ পূরণে সরকার উদ্যোগী হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, এটা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী হচ্ছে।

তবে এসব একটা বিষয়ের দিকেই ইঙ্গিত দেয়, কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে চাইছে ভারত। তা ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয়টাও বিবেচ্য। দেশটিতে বর্তমানে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা হবে ৫০ গিগাওয়াট। কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার জটিল হিসাব-নিকাশের কারণে তার অনেকগুলোর নির্মাণকাজই হয়তো স্থগিত করা হতে পারে।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার হঠাৎ করেই নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে তারা এই জ্বালানি থেকে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মধ্যপ্রদেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিলামে জেতা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা খরচের দিক থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পেরেছিল। মোদির সরকার সম্প্রতি ৫০টি ‘সোলার পার্কের’ অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ৪০ গিগাওয়াট।

তবে এত সব উদ্যোগ সত্ত্বেও ভারতে এখনো বিপুল পরিমাণ কয়লা পুড়ছে। দেশটির বহু পুরোনো প্রতিষ্ঠান সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মালিকানাধীন, যাঁরা হয়তো তাঁদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ঠেকাতে উদ্যোগী হবেন। এ ছাড়া কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমালে খনি খাতেও চাকরি হারানোর ভীতি বাড়বে। ফলে পুরোপুরি নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগোতে ভারত সরকারকে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হতে পারে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

প্রতিবছর নবায়নযোগ্য ৫০ গিগা বিদ্যুৎ চাই ভারতের

ইত্তেহাদ ডেস্ক ।। প্রকাশ: ০৯:৪৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩

ভারতের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর ক্ষমতার ৪০ শতাংশই এখন অব্যবহৃত থাকছে। মনে করা হচ্ছে, সরকার যে পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্মাণ করেছিল, প্রকৃত চাহিদা তত বেশি না হওয়াই এর কারণ। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের আগ্রহও এর পেছনে কাজ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। এ দেশে এখনো জ্বালানি হিসেবে কয়লার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। দেশটির বিদ্যুৎ চাহিদার ৬১ শতাংশই পূরণ হয় কয়লা পুড়িয়ে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন পূর্বসূরি বারাক ওবামার জলবায়ু নীতি উল্টে দিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করলেন, তখন হয়তো ভারতের কয়লাখনি ব্যবসায়ীদের চেয়ে বেশি খুশি কেউ হয়নি।

তবে ভারতের সাম্প্রতিক জ্বালানি চালচিত্রে ভিন্ন ছবিই দেখা যাচ্ছে। দেশটির সরকার ঘোষণা দিয়েছে, পরবর্তী দশকের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে তাদের আর নতুন করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কোনো প্রয়োজন নেই। সেই সঙ্গে সৌর ও বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ চাহিদার বড় অংশ পূরণে সরকার উদ্যোগী হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, এটা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী হচ্ছে।

তবে এসব একটা বিষয়ের দিকেই ইঙ্গিত দেয়, কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে চাইছে ভারত। তা ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয়টাও বিবেচ্য। দেশটিতে বর্তমানে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা হবে ৫০ গিগাওয়াট। কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার জটিল হিসাব-নিকাশের কারণে তার অনেকগুলোর নির্মাণকাজই হয়তো স্থগিত করা হতে পারে।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার হঠাৎ করেই নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে তারা এই জ্বালানি থেকে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মধ্যপ্রদেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিলামে জেতা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা খরচের দিক থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পেরেছিল। মোদির সরকার সম্প্রতি ৫০টি ‘সোলার পার্কের’ অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ৪০ গিগাওয়াট।

তবে এত সব উদ্যোগ সত্ত্বেও ভারতে এখনো বিপুল পরিমাণ কয়লা পুড়ছে। দেশটির বহু পুরোনো প্রতিষ্ঠান সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মালিকানাধীন, যাঁরা হয়তো তাঁদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ঠেকাতে উদ্যোগী হবেন। এ ছাড়া কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমালে খনি খাতেও চাকরি হারানোর ভীতি বাড়বে। ফলে পুরোপুরি নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগোতে ভারত সরকারকে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হতে পারে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক