ভারতের বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর এপ্রিল মাসে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করার প্রয়াসে উগান্ডা ও মোজাম্বিকে দ্বিদেশীয় সফর করেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উগান্ডা ভারতের অনেক উচ্চপর্যায়ের সফরকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮ সালে দেশটিতে গিয়েছিলেন। সেই সফরে তিনি উগান্ডার পার্লামেন্টে তাঁর বিখ্যাত ভাষণটি দিয়েছিলেন, এবং আফ্রিকার প্রতি ভারতের সর্বাধিক মনোযোগের নীতির কথা বলেছিলেন, যা কাম্পালা নীতিমালা নামে পরিচিত। এই নীতিগুলিতে এমন উপাদান রয়েছে যা মহাদেশটির প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গির ধারাবাহিকতা ও পরিবর্তন উভয়েরই নির্দেশক।
অন্যদিকে মোজাম্বিকের ভারত মহাসাগরে একটি বিস্তৃত উপকূলরেখা আছে এবং তা ভারতের কাছে কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। মরিশাসের পরে মোজাম্বিক আফ্রিকায় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) জন্য ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্য। এর একটা প্রমাণ হিসাবে বলা যায় ভারতীয় তেল সংস্থাগুলির রোভুমা গ্যাস বেসিনে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ‘অফশোর এরিয়া ১’ প্রকল্পে ৩০ শতাংশ অংশীদারি আছে। তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির মাধ্যমে এবং আমদানি উৎসকে বৈচিত্র্যময় করে নিজের শক্তি–সুরক্ষার জন্য নয়াদিল্লির কাছে মাপুটো এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। মোজাম্বিকের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি এবং সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে ভারত অনেক ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ দেশীয় আত্মরক্ষার সরঞ্জাম রপ্তানি করেছে, যেমন দ্রুত ইন্টারসেপ্টর বোট ও সাঁজোয়া যান।
ডঃ জয়শঙ্করের সফর এমন এক সময়ে হয়েছে যখন আফ্রিকার অন্যান্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদার, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, তুর্কিয়ে, জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আফ্রিকা+১ শীর্ষ সম্মেলনের নিজ নিজ সংস্করণ পরিচালনা করেছে। এমনকি রাশিয়ারও ২০২৩ সালের জুলাই মাসে সেন্ট পিটার্সবার্গে দ্বিতীয় রাশিয়া–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলন করার কথা রয়েছে৷ শীর্ষ বৈঠকগুলি কূটনীতি পরিচালনা ও ভূ–রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে উঠে এসেছে৷ আফ্রিকার বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ, জনসংখ্যাগত লভ্যাংশ এবং আফ্রিকান কন্টিনেন্টাল ফ্রি ট্রেড এরিয়া (আফসিএফটিএ)–র মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান একীকরণ এই মহাদেশটিকে বৈশ্বিক শক্তিগুলির কাছে উন্নয়নের জন্য তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা এবং তা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার গন্তব্যে পরিণত করেছে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক