০২:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাত আরোহীকে নিয়ে মহাকাশে যাচ্ছে ইসরোর রকেট

ফের আর একটি সাফল্যোর দোরগোরায় দাঁড়িয়ে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (আইএসআরও) পিএসএলভি সি-৫৬ (পিএসএলভি-সি৫৬) উৎক্ষেপণের সাথে সাথে আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবে।

চন্দ্রযান-৩ মিশনের পর এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ মিশন। রবিবার সকাল সাড়ে ৬টায় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের প্রথম লঞ্চ প্যাড থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে পিএসএলভি সি-৫৬ রকেটটি।

পূর্ববর্তী পিএসএলভি-সি৫৫ (পিএসএলভি-সি৫৫) মিশনের মতোই পিএসএলভি-সি৫৬ (পিএসএলভি-সি৫৬) মিশনটির নকশা প্রস্তুত হয়েছে কোর-অ্যালোন মোডে। এটির প্রাথমিক পেলোডে রয়েছে ডিএস-সার (ডিএস-এসএআর) স্যাটেলাইট, এটির ওজন ৩৬০ কেজি। এটি তৈরি হয়েছে সিঙ্গাপুরের ডিফেন্স সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এজেন্সি (ডিএসটিএ) ও এসটি (এসটি) ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যৌথ সহযোগিতায়। স্য়াটেলাইটটিকে পৃথিবীর নিরক্ষীয় কক্ষপথে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার উচ্চতায় ৫ ডিগ্রি অবস্থানে স্থাপন করা হবে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে এই ডিএস-সার (ডিএস-এসএআর) স্য়াটেলাইটটিতে। এতে রয়েছে একটি সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার এটি তৈরি করেছে ইজরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই)। দিন ও রাতের আবহাওয়ার একাধিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ চালাবে এটি। এক মিটার রেজোলিউশনে ছবি তুলতে সক্ষম রাডারটি।

একবার মিশন চালু হলে এই ডিএস-সার সিঙ্গাপুর সরকারের বিভিন্ন সংস্থার স্যাটেলাইট ইমেজের চাহিদা পূরণ করবে। এছাড়াও এসটি (এসটি) ইঞ্জিনিয়ারিং তাদের বাণিজ্যিক প্রয়োজন মেটাতে এই স্যাটেলাইটটি ব্যবহার করবে।

তবে পিএসএলভি-সি৫৬ (পিএসএলভি-সি৫৬) মিশনে শুধু ডিএস-সার (ডিএস-এসএআর) স্যাটেলাইটই নয়, মহাকাশে পাঠানো হবে আরও ছয়টি কৃত্রিম উপগ্রহ। সবকটি মহাকাশ গবেষণা, প্রযুক্তির অগ্রগতিতে অনন্য ভূমিকা পালন করবে।

পিএসএলভি-সি৫৬ রকেটে ডিএস-সার (ডিএস-এসএআর) ছাড়াও অন্য যে ছয়টি কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে সেগুলি হল: ভেলোক্স-এএম (ভিইএলওএক্স-এএম): একটি ২৩ ওজন বিশিষ্ট কেজি টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেশন মাইক্রোস্যাটেলাইট; আর্কেড (এআরসিএডিই) : একটি পরীক্ষামূলক উপগ্রহ; স্কুব-২ (এসসিওওবি-আইআই): এটি একটি টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেটর পেলোড বহনকারী থ্রিইউ (৩ইউ) ন্যানো স্যাটেলাইট; নুস্পেস-এর (এনইউএসপিএসিই) এর তৈরি নুলিয়ন (এনইউএলআইওএন) স্যাটেলাইট: একটি উন্নত থ্রিইউ (৩ইউ) ন্যানো স্যাটেলাইট। শহরের নিকটবর্তী ও গ্রাম এলাকাগুলির মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন আইওটি (আইওটি) সংযোগ সক্ষম; গালাসিয়া-২ (জিএএলএএসএসআইএ-২): একটি থ্রিইউ (৩ইউ) ন্যানো স্যাটেলাইট। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করেবে এটি; ওআরবি-১২ স্ট্রিডার (ওআরবি-১২ এসটিআরআইডিইআর): আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে এই স্যাটেলাইটটি।

এখনও পর্যন্ত ইসরোর পিএসএলভি উৎক্ষেপণে সাফল্যের হার ৯৪%। মহাকাশ গবেষণায় ইসরোর দক্ষতা যে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী সাফল্যের এই হারই তার প্রমাণ।

ভারতের মহাকাশ গবেষণার দক্ষতাকে ইসরো পিএসএলভি-সি৫৬ মিশনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরছে। পাশাপাশি এই মিশন আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়টিকে জোরদার করছে। মহাকাশ গবেষণায় ভারতের হাত ধরছে বিশ্বের বহু দেশ। বাড়ছে অংশীদারিত্ব। ভবিষ্যতে এই ধরনের মিশনের মাধ্য়মে মহাকাশ গবেষণার ভিত আরও মজবুত করতে পারবে ইসরো। লাভও হবে বেশি। মহাকাশ অনুসন্ধানে ভারতের আরও একটি সাফল্যের অপেক্ষায় দেশবাসী। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

ট্যাগ:

সাত আরোহীকে নিয়ে মহাকাশে যাচ্ছে ইসরোর রকেট

প্রকাশ: ১০:১০:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩

ফের আর একটি সাফল্যোর দোরগোরায় দাঁড়িয়ে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (আইএসআরও) পিএসএলভি সি-৫৬ (পিএসএলভি-সি৫৬) উৎক্ষেপণের সাথে সাথে আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবে।

চন্দ্রযান-৩ মিশনের পর এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ মিশন। রবিবার সকাল সাড়ে ৬টায় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের প্রথম লঞ্চ প্যাড থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে পিএসএলভি সি-৫৬ রকেটটি।

পূর্ববর্তী পিএসএলভি-সি৫৫ (পিএসএলভি-সি৫৫) মিশনের মতোই পিএসএলভি-সি৫৬ (পিএসএলভি-সি৫৬) মিশনটির নকশা প্রস্তুত হয়েছে কোর-অ্যালোন মোডে। এটির প্রাথমিক পেলোডে রয়েছে ডিএস-সার (ডিএস-এসএআর) স্যাটেলাইট, এটির ওজন ৩৬০ কেজি। এটি তৈরি হয়েছে সিঙ্গাপুরের ডিফেন্স সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এজেন্সি (ডিএসটিএ) ও এসটি (এসটি) ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যৌথ সহযোগিতায়। স্য়াটেলাইটটিকে পৃথিবীর নিরক্ষীয় কক্ষপথে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার উচ্চতায় ৫ ডিগ্রি অবস্থানে স্থাপন করা হবে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে এই ডিএস-সার (ডিএস-এসএআর) স্য়াটেলাইটটিতে। এতে রয়েছে একটি সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার এটি তৈরি করেছে ইজরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই)। দিন ও রাতের আবহাওয়ার একাধিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ চালাবে এটি। এক মিটার রেজোলিউশনে ছবি তুলতে সক্ষম রাডারটি।

একবার মিশন চালু হলে এই ডিএস-সার সিঙ্গাপুর সরকারের বিভিন্ন সংস্থার স্যাটেলাইট ইমেজের চাহিদা পূরণ করবে। এছাড়াও এসটি (এসটি) ইঞ্জিনিয়ারিং তাদের বাণিজ্যিক প্রয়োজন মেটাতে এই স্যাটেলাইটটি ব্যবহার করবে।

তবে পিএসএলভি-সি৫৬ (পিএসএলভি-সি৫৬) মিশনে শুধু ডিএস-সার (ডিএস-এসএআর) স্যাটেলাইটই নয়, মহাকাশে পাঠানো হবে আরও ছয়টি কৃত্রিম উপগ্রহ। সবকটি মহাকাশ গবেষণা, প্রযুক্তির অগ্রগতিতে অনন্য ভূমিকা পালন করবে।

পিএসএলভি-সি৫৬ রকেটে ডিএস-সার (ডিএস-এসএআর) ছাড়াও অন্য যে ছয়টি কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে সেগুলি হল: ভেলোক্স-এএম (ভিইএলওএক্স-এএম): একটি ২৩ ওজন বিশিষ্ট কেজি টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেশন মাইক্রোস্যাটেলাইট; আর্কেড (এআরসিএডিই) : একটি পরীক্ষামূলক উপগ্রহ; স্কুব-২ (এসসিওওবি-আইআই): এটি একটি টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেটর পেলোড বহনকারী থ্রিইউ (৩ইউ) ন্যানো স্যাটেলাইট; নুস্পেস-এর (এনইউএসপিএসিই) এর তৈরি নুলিয়ন (এনইউএলআইওএন) স্যাটেলাইট: একটি উন্নত থ্রিইউ (৩ইউ) ন্যানো স্যাটেলাইট। শহরের নিকটবর্তী ও গ্রাম এলাকাগুলির মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন আইওটি (আইওটি) সংযোগ সক্ষম; গালাসিয়া-২ (জিএএলএএসএসআইএ-২): একটি থ্রিইউ (৩ইউ) ন্যানো স্যাটেলাইট। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করেবে এটি; ওআরবি-১২ স্ট্রিডার (ওআরবি-১২ এসটিআরআইডিইআর): আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে এই স্যাটেলাইটটি।

এখনও পর্যন্ত ইসরোর পিএসএলভি উৎক্ষেপণে সাফল্যের হার ৯৪%। মহাকাশ গবেষণায় ইসরোর দক্ষতা যে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী সাফল্যের এই হারই তার প্রমাণ।

ভারতের মহাকাশ গবেষণার দক্ষতাকে ইসরো পিএসএলভি-সি৫৬ মিশনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরছে। পাশাপাশি এই মিশন আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়টিকে জোরদার করছে। মহাকাশ গবেষণায় ভারতের হাত ধরছে বিশ্বের বহু দেশ। বাড়ছে অংশীদারিত্ব। ভবিষ্যতে এই ধরনের মিশনের মাধ্য়মে মহাকাশ গবেষণার ভিত আরও মজবুত করতে পারবে ইসরো। লাভও হবে বেশি। মহাকাশ অনুসন্ধানে ভারতের আরও একটি সাফল্যের অপেক্ষায় দেশবাসী। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক