চলতি আগস্ট মাসে চাল রপ্তানিতে একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। প্রথমে বাসমতি ছাড়া অন্যান্য চালের রপ্তানি আগেই নিষিদ্ধ করা হয়। পরে সিদ্ধ চালের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং একদিন পর বাসমতি চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটি। তবে এতোসব বিধিনিষেধ পাশ কাটিয়ে ‘বিশেষ সম্পর্ক’ বিবেচনায় সিঙ্গাপুরে চাল রপ্তানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এ বিষয়ে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করবে দেশটি।
বলা হচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব দেশটির ‘খাদ্য প্রয়োজনীয়তা মেটাতে’ বন্ধুত্বের খাতিরে চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এই দু দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং জনগণের মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ রয়েছে। এ বিশেষ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত খাদ্য প্রয়োজনীয়তা মেটাতে চাল রপ্তানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারত অগাস্ট বাসমতি চালের রপ্তানিতে অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে যাতে অ-বাসমতি সাদা চালের রপ্তানি রোধ করা যায়, যা বর্তমানে নিষিদ্ধ বিভাগের অধীনে রয়েছে। গত রোববার, সরকার বলেছে যে তারা ভুল শ্রেণিবিন্যাস এবং বাসমতি ছাড়া অন্যান্য সাদা চালের অবৈধ রপ্তানির বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য ফিল্ড রিপোর্ট পেয়েছে। নন-বাসমতি সাদা চাল পারবোল্ড চাল এবং বাসমতি চালের এইচএস কোডের অধীনে রপ্তানি করা হচ্ছে,’ সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে।
এশিয়ান দেশগুলির মধ্যে ভারতের আঞ্চলিক ও বৃহত্তর পররাষ্ট্র নীতিতে সিঙ্গাপুর এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। তাই সিঙ্গাপুরে নিজের অবস্থান আরও শক্ত করতে উদ্যোগী ভারত। আগামী সেপ্টেম্বরে মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি২০ সম্মেলনের। তার আগেই ভারতের এই চাল রপ্তানি নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের মতো চীনের সঙ্গে সুমধুর সম্পর্ক সিঙ্গাপুরের। তার মাঝে বিপদে বন্ধুর দিকে সাহায্যের হাত বাড়াল ভারত। চাল রপ্তানির হাত ধরেই ভারত ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে সম্পর্কে আরও উন্নতি ঘটবে বলেই বিশ্বাস রাজনৈতিক মহলের। এর ফলে দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও জন সম্পর্ক ক্রমাগত মজবুত হয়ে উঠবে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত। বিশ্ববাজারে মোট চাল রপ্তানির প্রায় ৪০ শতাংশই যায় ভারত থেকে। চাল রপ্তানির শীর্ষে থাকা অন্য দেশগুলো হলো থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্র। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক