০৪:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেটে ছাত্রলীগের ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটের জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগের ৪ নেতাকর্মীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

ভাঙচুরের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলামের নেতৃত্বে এ প্রতিনিধি দল আজ রবিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছে। অপরদিকে, মৃত্যুর ঘটনায় পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

গত শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার ৪ নম্বর বাংলাবাজার ব্রিজের পাশে রাংপানি নামক স্থানে একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মসজিদের পুকুরে পড়ে ৪ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী মারা যান। নিহতরা হলেন- নিহাল পাল (২৬), জুবায়ের আহমদ সাব্বির (২৬), মেহেদী হাসান তামাল (২৫) ও সুমন আহমদ (২৫)। তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

 

জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার রাত ১টার দিকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দুজন করে ৪ জনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরতরা সবাইকে মৃত ঘোষণা করেন। সে সময় তাদের ইসিজিও করা হয়েছিল। পরে স্থানীয়রা নিহতদের সিলেটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন, কিন্তু চালক না থাকায় তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে প্রথমে হাসপাতালের নিচতলা এবং পরে স্টাফ কোয়ার্টারে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এছাড়া হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক হিল্লোল সাহা এবং স্টাফ আব্দুস সাত্তারকে মারধর করেন। এসময় হাসপাতালে থাকা একটি সরকারি জিপে আগুন ও অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

এদিকে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই ওই চারজনকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসায় অসহযোগিতা করা হয়েছে। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেটি দেওয়া হয়নি। এসময় উত্তেজিত জনতা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুর করে।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে করা মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নিহাল পালের বাবা বাদী থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

অপরদিকে, এই চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গত শনিবার ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- জেলা প্রশাসনের এডিএম ইমরুল হাসান, বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশ, সিভিল সার্জন ও  ফায়ার সার্ভিসের একজন করে কর্মকর্তা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম জানান, ৫ কার্যদিবসের মধ্যে দুর্ঘটনায় সার্বিক বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগ:

সিলেটে ছাত্রলীগের ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ: ০৭:২১:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৪

সিলেটের জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগের ৪ নেতাকর্মীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

ভাঙচুরের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলামের নেতৃত্বে এ প্রতিনিধি দল আজ রবিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছে। অপরদিকে, মৃত্যুর ঘটনায় পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

গত শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার ৪ নম্বর বাংলাবাজার ব্রিজের পাশে রাংপানি নামক স্থানে একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মসজিদের পুকুরে পড়ে ৪ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী মারা যান। নিহতরা হলেন- নিহাল পাল (২৬), জুবায়ের আহমদ সাব্বির (২৬), মেহেদী হাসান তামাল (২৫) ও সুমন আহমদ (২৫)। তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

 

জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার রাত ১টার দিকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দুজন করে ৪ জনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরতরা সবাইকে মৃত ঘোষণা করেন। সে সময় তাদের ইসিজিও করা হয়েছিল। পরে স্থানীয়রা নিহতদের সিলেটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন, কিন্তু চালক না থাকায় তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে প্রথমে হাসপাতালের নিচতলা এবং পরে স্টাফ কোয়ার্টারে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এছাড়া হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক হিল্লোল সাহা এবং স্টাফ আব্দুস সাত্তারকে মারধর করেন। এসময় হাসপাতালে থাকা একটি সরকারি জিপে আগুন ও অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

এদিকে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই ওই চারজনকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসায় অসহযোগিতা করা হয়েছে। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেটি দেওয়া হয়নি। এসময় উত্তেজিত জনতা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুর করে।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে করা মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নিহাল পালের বাবা বাদী থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

অপরদিকে, এই চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গত শনিবার ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- জেলা প্রশাসনের এডিএম ইমরুল হাসান, বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশ, সিভিল সার্জন ও  ফায়ার সার্ভিসের একজন করে কর্মকর্তা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম জানান, ৫ কার্যদিবসের মধ্যে দুর্ঘটনায় সার্বিক বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেওয়া হয়েছে।