০৫:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সামুদ্রিক সম্পর্কোন্নয়নে এককাট্টা ভারত-মরক্কো

ভারত-মরক্কো সামুদ্রিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ (আইএনএস) তুশিল শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪) কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কোতে প্রথমবারের মতো পোর্ট কল করেছে। এটি তুশিলের প্রথম অপারেশনাল মোতায়েনের অংশ এবং অঞ্চলটিতে ভারতের সামুদ্রিক কূটনীতির অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

আইএনএস তুশিল: ভারতের অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ

৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে রাশিয়ায় কমিশনড আইএনএস তুশিল ভারতের সর্বাধুনিক মাল্টি-রোল স্টিলথ-গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ফ্রিগেট। ক্যাপ্টেন পিটার ভার্গিজের নেতৃত্বে ২৫০ জন কর্মীর একটি দল এই জাহাজটি পরিচালনা করে। জাহাজের এই সফর ভারত-মরক্কোর মধ্যে দৃঢ় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।

আস্থা ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই পোর্ট কলের লক্ষ্য ভারতীয় নৌবাহিনী ও রয়্যাল মরোক্কান নেভির মধ্যে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন। গত বছরে তিনটি ভারতীয় নৌজাহাজ—আইএনএস তবর, আইএনএস তারকাশ, এবং আইএনএস সুমেধা—কাসাব্লাঙ্কা সফর করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও পারস্পরিক সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।

দুই দিনের এই সফরে আইএনএস তুশিলের ক্রু রয়্যাল মরোক্কান নেভির সদস্যদের সঙ্গে পেশাদার বিনিময় করেছেন। প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে ছিল ক্রস-ডেক ভিজিট, কার্যকরী পর্যায়ে আলোচনা, এবং সৌজন্যমূলক আয়োজন।

প্যাসেজ এক্সারসাইজ

পোর্ট কল শেষে আইএনএস তুশিল এবং রয়্যাল মরোক্কান নেভি সমুদ্রে একটি প্যাসেজ এক্সারসাইজ এ অংশ নেবে। এই অনুশীলনের লক্ষ্য দুই নৌবাহিনীর মধ্যে কার্যক্রমের সামঞ্জস্য বৃদ্ধি করা এবং পারস্পরিক দক্ষতা বিনিময় করা।

ভারত-মরক্কো কৌশলগত সম্পর্ক

মরক্কোর ভৌগোলিক অবস্থান, যা ইউরোপ ও আফ্রিকার মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে, ভারতকে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারে সহায়তা করে। ভারত-মরক্কো সম্পর্ক প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, জ্বালানি এবং খাদ্য নিরাপত্তার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে শক্তিশালী হয়েছে। সামরিক অনুশীলন ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে।

বাণিজ্য ও নবায়নযোগ্য শক্তি সহযোগিতা

দুই দেশের বাণিজ্য ২০১৮-১৯ সালে ২ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২২-২৩ সালে ৩.৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ফসফেট ও কাঁচামাল রপ্তানি এবং ভারতীয় বস্ত্র, ওষুধ ও যন্ত্রপাতি রপ্তানি এই বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে মরক্কো আফ্রিকার সবুজ শক্তি উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছে, আর ভারত বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য প্রযুক্তিতে অগ্রসর হচ্ছে।

আইএনএস তুশিলের এই মিশন ভারতের সামুদ্রিক সক্ষমতা এবং কূটনৈতিক উদ্যোগের প্রতীক। রয়্যাল মরোক্কান নেভি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে জাহাজটি বৈশ্বিক সামুদ্রিক সহযোগিতায় ভারতের নির্ভরযোগ্য ভূমিকা পুনর্ব্যক্ত করছে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।

ট্যাগ:

সামুদ্রিক সম্পর্কোন্নয়নে এককাট্টা ভারত-মরক্কো

প্রকাশ: ০৯:৪৭:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারত-মরক্কো সামুদ্রিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ (আইএনএস) তুশিল শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪) কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কোতে প্রথমবারের মতো পোর্ট কল করেছে। এটি তুশিলের প্রথম অপারেশনাল মোতায়েনের অংশ এবং অঞ্চলটিতে ভারতের সামুদ্রিক কূটনীতির অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

আইএনএস তুশিল: ভারতের অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ

৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে রাশিয়ায় কমিশনড আইএনএস তুশিল ভারতের সর্বাধুনিক মাল্টি-রোল স্টিলথ-গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ফ্রিগেট। ক্যাপ্টেন পিটার ভার্গিজের নেতৃত্বে ২৫০ জন কর্মীর একটি দল এই জাহাজটি পরিচালনা করে। জাহাজের এই সফর ভারত-মরক্কোর মধ্যে দৃঢ় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।

আস্থা ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই পোর্ট কলের লক্ষ্য ভারতীয় নৌবাহিনী ও রয়্যাল মরোক্কান নেভির মধ্যে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন। গত বছরে তিনটি ভারতীয় নৌজাহাজ—আইএনএস তবর, আইএনএস তারকাশ, এবং আইএনএস সুমেধা—কাসাব্লাঙ্কা সফর করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও পারস্পরিক সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।

দুই দিনের এই সফরে আইএনএস তুশিলের ক্রু রয়্যাল মরোক্কান নেভির সদস্যদের সঙ্গে পেশাদার বিনিময় করেছেন। প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে ছিল ক্রস-ডেক ভিজিট, কার্যকরী পর্যায়ে আলোচনা, এবং সৌজন্যমূলক আয়োজন।

প্যাসেজ এক্সারসাইজ

পোর্ট কল শেষে আইএনএস তুশিল এবং রয়্যাল মরোক্কান নেভি সমুদ্রে একটি প্যাসেজ এক্সারসাইজ এ অংশ নেবে। এই অনুশীলনের লক্ষ্য দুই নৌবাহিনীর মধ্যে কার্যক্রমের সামঞ্জস্য বৃদ্ধি করা এবং পারস্পরিক দক্ষতা বিনিময় করা।

ভারত-মরক্কো কৌশলগত সম্পর্ক

মরক্কোর ভৌগোলিক অবস্থান, যা ইউরোপ ও আফ্রিকার মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে, ভারতকে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারে সহায়তা করে। ভারত-মরক্কো সম্পর্ক প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, জ্বালানি এবং খাদ্য নিরাপত্তার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে শক্তিশালী হয়েছে। সামরিক অনুশীলন ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে।

বাণিজ্য ও নবায়নযোগ্য শক্তি সহযোগিতা

দুই দেশের বাণিজ্য ২০১৮-১৯ সালে ২ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২২-২৩ সালে ৩.৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ফসফেট ও কাঁচামাল রপ্তানি এবং ভারতীয় বস্ত্র, ওষুধ ও যন্ত্রপাতি রপ্তানি এই বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে মরক্কো আফ্রিকার সবুজ শক্তি উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছে, আর ভারত বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য প্রযুক্তিতে অগ্রসর হচ্ছে।

আইএনএস তুশিলের এই মিশন ভারতের সামুদ্রিক সক্ষমতা এবং কূটনৈতিক উদ্যোগের প্রতীক। রয়্যাল মরোক্কান নেভি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে জাহাজটি বৈশ্বিক সামুদ্রিক সহযোগিতায় ভারতের নির্ভরযোগ্য ভূমিকা পুনর্ব্যক্ত করছে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।