১০:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাঙছে মায়ানমার, নয়া প্রতিবেশী পাচ্ছে বাংলাদেশ, আমরা প্রস্তুত ত?

ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল: মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্য বর্তমানে এক কঠিন রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এখানে ‘জেলা’ যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট, আরাকানে সেটাই ‘টাউনশিপ’ নামে পরিচিত, এবং রাজ্যটিতে মোট ১৭টি টাউনশিপ বা জেলা রয়েছে। ইতোমধ্যে মায়ানমারের সরকারী বাহিনীকে হারিয়ে মাত্র ০৩টি বাদে বাকি ১৪ টি টাউনশিপই দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। বাকি তিন টাউনশিপ যথাক্রমে, আকিয়াব (সিত্তে), মুনাং, এবং কাইয়াকফু হচ্ছে এমন তিনটি অঞ্চল, যা ভূ-ভৌগলিক ও অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই শহরগুলো সাগরের কাছাকাছি অবস্থিত, যা তৈরি করেছে জটিল এক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি। 

বিশেষ করে আকিয়াব, মুনাং এবং কাইয়াকফু শহরগুলোর দখল আরাকান আর্মির জন্য বড় কৌশলগত উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, আসন্ন দিনগুলোতে আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংঘাতের মূল জায়গা হবে সমুদ্র, এবং, এই টাউনশিপগুলোতে সশস্ত্র সংঘাত নৌযুদ্ধের আকার নিতে পারে, যা বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল খুব কাছেই। বিশেষত, এই যুদ্ধের ফলাফল প্রায় নিশ্চিত—আরাকান আর্মির পক্ষে। কারণ, শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ রাখাইন জনগণের মধ্যে আরাকান আর্মির জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা এতই বেশি, যা জান্তাবাহিনীকে একেবারে নৈতিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে।

এমতাবস্থায় যদি মায়ানমার ভেঙ্গে নতুন রাষ্ট্র গঠিত হয়, তাহলে বলাই যায়, অচিরেই মিয়ানমার আর আমাদের প্রতিবেশী হিসেবে থাকছে না। অনেকটা নিশ্চিতই যে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী পরিবর্তিত হতে যাচ্ছে এবং এর ফলে বাংলাদেশ নতুন ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার সম্মুখীন হতে চলেছে। মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বাংলাদেশে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে, এবং তাই বাংলাদেশকে আরও সর্তক এবং প্রস্তুত থাকতে হবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে।

লেখক: সম্পাদক, দৈনিক ইত্তেহাদ

ট্যাগ:

ভাঙছে মায়ানমার, নয়া প্রতিবেশী পাচ্ছে বাংলাদেশ, আমরা প্রস্তুত ত?

প্রকাশ: ০৯:১০:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫

ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল: মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্য বর্তমানে এক কঠিন রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এখানে ‘জেলা’ যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট, আরাকানে সেটাই ‘টাউনশিপ’ নামে পরিচিত, এবং রাজ্যটিতে মোট ১৭টি টাউনশিপ বা জেলা রয়েছে। ইতোমধ্যে মায়ানমারের সরকারী বাহিনীকে হারিয়ে মাত্র ০৩টি বাদে বাকি ১৪ টি টাউনশিপই দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। বাকি তিন টাউনশিপ যথাক্রমে, আকিয়াব (সিত্তে), মুনাং, এবং কাইয়াকফু হচ্ছে এমন তিনটি অঞ্চল, যা ভূ-ভৌগলিক ও অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই শহরগুলো সাগরের কাছাকাছি অবস্থিত, যা তৈরি করেছে জটিল এক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি। 

বিশেষ করে আকিয়াব, মুনাং এবং কাইয়াকফু শহরগুলোর দখল আরাকান আর্মির জন্য বড় কৌশলগত উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, আসন্ন দিনগুলোতে আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংঘাতের মূল জায়গা হবে সমুদ্র, এবং, এই টাউনশিপগুলোতে সশস্ত্র সংঘাত নৌযুদ্ধের আকার নিতে পারে, যা বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল খুব কাছেই। বিশেষত, এই যুদ্ধের ফলাফল প্রায় নিশ্চিত—আরাকান আর্মির পক্ষে। কারণ, শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ রাখাইন জনগণের মধ্যে আরাকান আর্মির জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা এতই বেশি, যা জান্তাবাহিনীকে একেবারে নৈতিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে।

এমতাবস্থায় যদি মায়ানমার ভেঙ্গে নতুন রাষ্ট্র গঠিত হয়, তাহলে বলাই যায়, অচিরেই মিয়ানমার আর আমাদের প্রতিবেশী হিসেবে থাকছে না। অনেকটা নিশ্চিতই যে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী পরিবর্তিত হতে যাচ্ছে এবং এর ফলে বাংলাদেশ নতুন ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার সম্মুখীন হতে চলেছে। মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বাংলাদেশে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে, এবং তাই বাংলাদেশকে আরও সর্তক এবং প্রস্তুত থাকতে হবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে।

লেখক: সম্পাদক, দৈনিক ইত্তেহাদ