মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার বর্তমানে ভারতীয় কোম্পানিগুলির জন্য পারমাণবিক খাতে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যার উদ্দেশ্য হলো ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লির মধ্যে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক সহযোগিতা বাড়ানো। এ ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাক সুলিভান।
সুলিভান বলেন, “আজ আমি ঘোষণা করতে পারি যে, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি চূড়ান্ত করছে, যা ভারতের শীর্ষ পারমাণবিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং মার্কিন কোম্পানিগুলির মধ্যে সহযোগিতা বন্ধ করা দীর্ঘদিনের বিধিনিষেধ তুলে নেবে।” তিনি আরও জানান, এই পরিবর্তনগুলির বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এই সিদ্ধান্তটি ভারতের পারমাণবিক ক্ষেত্রের সাথে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। সুলিভান বলেন, “এটি অতীতের কিছু অমিলের পৃষ্ঠায় নতুন একটি অধ্যায় শুরু করার সুযোগ হবে এবং এর মাধ্যমে সেই সব সংস্থাগুলোর জন্য সুযোগ সৃষ্টি হবে, যারা নিষেধাজ্ঞা তালিকায় ছিল, তাদেরকে সেই তালিকা থেকে মুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে গভীর সহযোগিতায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে। এর মধ্যে থাকবে আমাদের বেসরকারি খাত, বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদরা – যারা শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক সহযোগিতা এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।”
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার সম্পর্কিত সহযোগিতা আরও মজবুত হতে চলেছে। গত কয়েক দশক ধরে, ভারত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি এজেন্সি এর শর্তাবলী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির আওতায় কিছু বিধিনিষেধের মুখে ছিল, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক সহযোগিতা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে, এই নতুন পদক্ষেপটি সেই বাধা দূর করবে এবং আগামী দিনে উভয় দেশকেই পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা করার সুযোগ দিবে।
এটি শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে না, বরং বৈশ্বিক শক্তি বাজারে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানও আরও শক্তিশালী করবে। বিশেষ করে, ভারত তার পারমাণবিক শক্তির চাহিদা পূরণের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে এবং এই উদ্যোগটি সে পথেই একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে। এর ফলে ভারত তার শক্তি উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম হবে, যার মধ্যে পারমাণবিক শক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এই সিদ্ধান্তটি তাদের পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রের প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন সম্প্রসারণের জন্য একটি বড় সুযোগ। ভারতীয় বাজারে তাদের প্রযুক্তির প্রবেশ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতা থেকে তারা ব্যাপক লাভ করতে পারে। এ পদক্ষেপটি শুধু পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রে নয়, বরং বিজ্ঞান, গবেষণা এবং উন্নয়ন ক্ষেত্রেও উভয় দেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।