মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ গাসসান মউমুন তিন দিনের জন্য বুধবার (৮ জানুয়ারি, ২০২৫) ভারত সফরে আসছেন। এই সফরে তিনি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এটি দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনার ধারাবাহিকতায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
সোমবার (৭ জানুয়ারি, ২০২৫) ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বুধবার দিল্লিতে অনুষ্ঠিত আলোচনায় তারা দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করবেন। এর মধ্যে প্রশিক্ষণ, নিয়মিত মহড়া, প্রতিরক্ষা প্রকল্প, কর্মশালা এবং সেমিনারের মাধ্যমে মালদ্বীপের ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (এমএনডিএফ)-এর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও স্টোর সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সফরের সময় মউমুন গোয়া এবং মুম্বাইও পরিদর্শন করবেন। এই বৈঠক মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ খালিলের দিল্লি সফরের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি ২-৪ জানুয়ারি, ২০২৫ পর্যন্ত ভারত সফর করেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করেন।
জয়শঙ্কর এবং খালিল অক্টোবর ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর মধ্যে আলোচনায় হওয়া সমঝোতার অগ্রগতি মূল্যায়ন করেন এবং উভয়পক্ষের বাড়তি মনোযোগ প্রয়োজন এমন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর মালদ্বীপের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দেশটিকে ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির একটি “উপলব্ধিযোগ্য উদাহরণ” হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি আরও বলেন, মালদ্বীপের উন্নতি ও সমৃদ্ধির প্রতি ভারত নির্ভরযোগ্য সহযোগী হিসেবে পাশে থাকবে।
বৈঠকের সময়, উভয় পক্ষ মালদ্বীপে উচ্চ-প্রভাবসম্পন্ন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তৃতীয় পর্যায়ের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে, যা ভারত সরকারের অনুদানের সহায়তায় সম্পন্ন হবে।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু দিল্লিতে বিস্তৃত দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেন। আলোচনায় অর্থনৈতিক এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব জোরদারের জন্য একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা প্রণীত হয়।
আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল ছিল সামুদ্রিক এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা অগ্রগতি। এর অংশ হিসেবে, ভারত মালদ্বীপকে “প্রতিরক্ষা প্ল্যাটফর্ম এবং সরঞ্জাম সরবরাহের” মাধ্যমে এমএনডিএফ-এর সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করছে। যৌথ ভিশন বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত মালদ্বীপকে রাডার সিস্টেম ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে এমএনডিএফ-এর নজরদারি এবং পর্যবেক্ষণ সক্ষমতা বাড়াতেও সহায়তা করবে।
ভারত এবং মালদ্বীপের মধ্যে আধ্যাত্মিক, ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে। মালদ্বীপ ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিতে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে, যার লক্ষ্য ভারত মহাসাগর অঞ্চলে স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। উভয় দেশই ভারত মহাসাগর অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং এইভাবেই ভারতের ‘সাগর’ (সিকিউরিটি অ্যান্ড গ্রোথ ফর অল ইন দ্য রিজিয়ন) ভিশনের বাস্তবায়নে অবদান রাখছে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।