১২:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করবে ভারত-মালেশিয়া

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি, ২০২৫) প্রথম ভারত-মালয়েশিয়া নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এই সংলাপে উভয় দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ড ও চরমপন্থা প্রতিরোধের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা শিল্প এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা আরও গভীর করার বিষয়ে একমত হন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) জানিয়েছে, বৈঠকে উভয় পক্ষ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করে এবং নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও সামুদ্রিক ক্ষেত্রে চলমান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা পর্যালোচনা করেছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং বিরল খনিজ সম্পদের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বার্ষিক ভিত্তিতে এই সংলাপ আয়োজনের মাধ্যমে এটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রথম ভারত-মালয়েশিয়া নিরাপত্তা সংলাপটি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং মালয়েশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মহাপরিচালক রাজা দাতো নুশিরওয়ান বিন জাইনাল আবেদিনের সহ-সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ভারতে সফর করেন। এই সফরের ফলাফল হিসেবেই এই সংলাপের আয়োজন।

ওই সফরের সময় ভারত-মালয়েশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করা হয় এবং দুই দেশের নেতারা নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে সম্মত হন।

সংলাপের অংশ হিসেবে উভয় দেশ একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি ছিল কর্মী নিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তি। এছাড়া ডিজিটাল প্রযুক্তি, পর্যটন, সংস্কৃতি, শিল্প এবং ঐতিহ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্যও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা

ভারত ও মালয়েশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক গত কয়েক বছরে ক্রমাগত শক্তিশালী হয়েছে। ১৯৯৩ সালে স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক এই সম্পর্কের মূল ভিত্তি। এই স্মারক অনুযায়ী যৌথ উদ্যোগ, যৌথ উন্নয়ন প্রকল্প, সরঞ্জাম সংগ্রহ, রক্ষণাবেক্ষণ সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের মতো সহযোগিতার সুযোগ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে মালয়েশিয়া সফরকালে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের উপস্থিতিতে এই সমঝোতা স্মারকে সংশোধনী যুক্ত করা হয়। ওই সফরের সময় কুয়ালালামপুরে হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের প্রথম আঞ্চলিক অফিসও উদ্বোধন করা হয়।

উভয় দেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক মহড়া পরিচালনা করে আসছে। ২০২২ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো ‘উদারা শক্তি’ নামে যৌথ বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ‘হরিমাউ শক্তি’ নামে সেনাবাহিনীর মহড়ায় উভয় দেশ অংশগ্রহণ করে। ভারতীয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো নিয়মিত মালয়েশিয়ার বন্দরে সফর করে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।  

ট্যাগ:

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করবে ভারত-মালেশিয়া

প্রকাশ: ১০:০৪:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি, ২০২৫) প্রথম ভারত-মালয়েশিয়া নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এই সংলাপে উভয় দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ড ও চরমপন্থা প্রতিরোধের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা শিল্প এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা আরও গভীর করার বিষয়ে একমত হন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) জানিয়েছে, বৈঠকে উভয় পক্ষ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করে এবং নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও সামুদ্রিক ক্ষেত্রে চলমান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা পর্যালোচনা করেছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং বিরল খনিজ সম্পদের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বার্ষিক ভিত্তিতে এই সংলাপ আয়োজনের মাধ্যমে এটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রথম ভারত-মালয়েশিয়া নিরাপত্তা সংলাপটি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং মালয়েশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মহাপরিচালক রাজা দাতো নুশিরওয়ান বিন জাইনাল আবেদিনের সহ-সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ভারতে সফর করেন। এই সফরের ফলাফল হিসেবেই এই সংলাপের আয়োজন।

ওই সফরের সময় ভারত-মালয়েশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করা হয় এবং দুই দেশের নেতারা নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে সম্মত হন।

সংলাপের অংশ হিসেবে উভয় দেশ একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি ছিল কর্মী নিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তি। এছাড়া ডিজিটাল প্রযুক্তি, পর্যটন, সংস্কৃতি, শিল্প এবং ঐতিহ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্যও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা

ভারত ও মালয়েশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক গত কয়েক বছরে ক্রমাগত শক্তিশালী হয়েছে। ১৯৯৩ সালে স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক এই সম্পর্কের মূল ভিত্তি। এই স্মারক অনুযায়ী যৌথ উদ্যোগ, যৌথ উন্নয়ন প্রকল্প, সরঞ্জাম সংগ্রহ, রক্ষণাবেক্ষণ সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের মতো সহযোগিতার সুযোগ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে মালয়েশিয়া সফরকালে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের উপস্থিতিতে এই সমঝোতা স্মারকে সংশোধনী যুক্ত করা হয়। ওই সফরের সময় কুয়ালালামপুরে হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের প্রথম আঞ্চলিক অফিসও উদ্বোধন করা হয়।

উভয় দেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক মহড়া পরিচালনা করে আসছে। ২০২২ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো ‘উদারা শক্তি’ নামে যৌথ বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ‘হরিমাউ শক্তি’ নামে সেনাবাহিনীর মহড়ায় উভয় দেশ অংশগ্রহণ করে। ভারতীয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো নিয়মিত মালয়েশিয়ার বন্দরে সফর করে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।