ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে ১১তম মানবাধিকার সংলাপ ৮ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়। এই সংলাপ গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের অভিন্ন মূল্যবোধে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। সংলাপটি যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (ইউরোপ পশ্চিম) যুগ্ম সচিব পীযূষ শ্রীবাস্তব এবং ভারতে ইইউর রাষ্ট্রদূত হার্ভে ডেলফিন।
প্রধান আলোচ্য বিষয়
সংলাপে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার এবং অনলাইন ও অফলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে লিঙ্গ সমতা, অধিকারের সুরক্ষা, শিশুদের অধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, এবং বৈষম্য দূরীকরণ প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ধর্মীয় স্বাধীনতা, ধর্মীয় ঘৃণার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, এবং সমাবেশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বেসরকারি সংস্থাগুলোর স্বতন্ত্রতা এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
মৃত্যুদণ্ডের বিষয়েও আলোচনা হয়, যেখানে ইইউ এটি বিলুপ্ত করার আহ্বান জানায় এবং ভারত উন্নয়নের অধিকারকে একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করে।
প্রযুক্তি ও মানবাধিকার, অভিবাসীদের অধিকার এবং মানবাধিকার রক্ষায় ব্যবসার ভূমিকা সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী মানবিক সহায়তা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সহযোগিতার উপর জোর দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শক্তিশালীকরণ
সংলাপে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সুরক্ষা প্রক্রিয়াগুলোকে শক্তিশালী করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং মানবাধিকার কাউন্সিলের মতো ফোরামে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে অঙ্গীকার
ভারত ও ইইউ গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, এবং মানব মর্যাদার প্রতি তাদের অভিন্ন অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, আইনের শাসন এবং সকল মানবাধিকার সুরক্ষায় ভারত ও ইইউ একসাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সংলাপে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় পক্ষই মানবাধিকার উন্নয়নে অর্জন ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে। ২০২৬ সালে পরবর্তী মানবাধিকার সংলাপের পরিকল্পনাও ঘোষণা করা হয়।
এই সংলাপ ভারত ও ইইউর ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করে, যা মানবাধিকার, বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিরাপত্তা নিয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।